পাবলিক আইপি (ইন্টারনেট প্রটোকল) না পাওয়ায় জাপানে প্রবাসী ভোটার হালনাগাদ আটকে আছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, জাপানে প্রবাসী ভোটার হালনাগাদের জন্য আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। যারা যাবেন কারিগরি সহায়তা দিতে তাদের ভিসাও করা হয়েছে। কিন্তু ওখানে পাবলিক আইপি পেতে একটু সময় লাগছে।
ওখানে প্রাইভেট আইপি পাওয়া খুব সহজ। কিন্তু পাবলিক আইপিটা একটু সময় লাগে। আশা করি বৃহস্পতিবারের মধ্যে আমরা পাবলিক আইপিটা পেয়ে যাব। যদি আমরা পাবলিক আইপিটা পেয়ে যাই আমাদের জনবল যাওয়ার জন্য ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগবে।
তিনি আরও বলেন, প্রবাসী ভোটার রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমের আওতায় আরও পাঁচটি নতুন দেশে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। দেশগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র, ওমান, দক্ষিণ আফ্রিকা, জর্ডান, মালদ্বীপ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর, প্রাথমিক প্রস্তুতি যেমন ইকুইপমেন্ট এবং জনবল প্রস্তুতকরণ, প্রশিক্ষণ এবং যন্ত্রপাতির ইন্টিগ্রেশন প্রক্রিয়া এরইমধ্যে শুরু হয়েছে।
নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার নিবন্ধন কাজ শুরু করতে নতুন করে আরও ৫টি দেশের সম্মতি পেয়েছি। এরইমধ্যে ৯টি দেশের ১৬টি মিশন অফিসে কাজ চলমান রয়েছে। দশম দেশ হিসেবে চলতি জুলাই মাসে কাজ শুরু হবে। মধ্য জুলাইয়ে শুরু করার কথা থাকলেও স্থানীয় কারিগরি সুবিধা (পাবলিক আইপি পেতে বিলম্ব) শেষে শিগগির চালু হবে।
এনআইডি ডিজি বলেন, নতুন ৫টি দেশে নিবন্ধন শুরুর প্রাথমিক প্রস্তুতি কাজ চলছে। এর জন্য ইকুপমেন্ট প্রস্তুত করতে হবে, জনবল ও প্রয়োজনীয় দক্ষ লোককে প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতির ইন্টিগ্রেশনের বিষয়গুলো রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের পাশাপাশি নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটনসহ যেখানে বাংলাদেশের অফিস রয়েছে, সেগুলোতে চালু করার সম্মতি মিলেছে। বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় ১৬টি মিশন অফিসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এনআইডি সেবা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের ডিজি জানান, পর্যায়ক্রমে ৪০টি দেশে এনআইডি সেবা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। এ পর্যন্ত নয়টি দেশে মোট আবেদন করেছেন ৪৮ হাজার ৮০ জন। তাদের মধ্যে আঙুলের ছাপ দিয়ে নিবন্ধন সেরেছেন ২৯ হাজার ৬৪৬ জন; যার মধ্যে ১৭ হাজার ৩৬৭ জন ভোটার হয়েছেন। ২০০৭-২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন শুরুর সময়ই প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করা ও এনআইডি দেওয়ার দাবি ওঠে।
দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার নিবন্ধন নিয়ে নানা ধরনের জটিলতা পেরিয়ে তৎকালীন কমিশন ২০১৯ সালের নভেম্বরে মালয়েশিয়ায় অনলাইন নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু এরপর কোভিড মহামারিতে সেই উদ্যোগ থমকে যায়। পরে আবার সেই কাজে গতি আনার উদ্যোগ নিলেও গত কমিশনের সময় ২০২৩ সালের জুলাইয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর আবার স্থবিরতা দেখা দেয় এ কার্যক্রমে। এ ধারাবাহিকতায় বর্তমান এএমএম নাসির উদ্দিন কমিশন কার্যক্রম শুরু করে।
এমকে/টিএ