সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রতি সমর্থন থাকলেও উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়েছে। উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া নিয়ে কমিশন আগামী রোববার (২০ জুলাই) সিদ্ধান্ত জানাবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা জানান।
আলী রীয়াজ বলেন, কমিশনের বৈঠকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ এবং সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তবে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হওয়ায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার কমিশনের ওপরই পড়েছে।
‘এছাড়া, দেশের গণআন্দোলনে বিশেষ করে গত বছরের গণঅভ্যুত্থানে নারীদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে সাংবিধানিকভাবে তাদের মর্যাদা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছে কমিশন। দীর্ঘদিন ধরে চলা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের আলোচনায় এবার কিছুটা ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে।’
ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রতি সমর্থন থাকলেও উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়েছে। কিছু দল ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার পক্ষে। আবার কেউ কেউ আসনের সংখ্যানুপাতে গঠনের প্রস্তাব করেছেন। যেহেতু এ বিষয়ে দলগুলো কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি, তাই উচ্চকক্ষ সম্পর্কিত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভার ঐকমত্য কমিশনের ওপর অর্পণ করা হয়েছে। কমিশন আগামী দিনগুলোতে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবে এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবে।
সংবিধান সংশোধনের বিষয়টি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠিত না হলে অথবা গঠিত হওয়া পর্যন্ত সংবিধান সংশোধনের জন্য সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সমর্থন প্রয়োজন হবে। তবে কিছু সুনির্দিষ্ট অনুচ্ছেদ যেমন প্রস্তাবনা, অনুচ্ছেদ ৮, ৪৮, ৫৬, ১৪২ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা (অনুচ্ছেদ ৫৮ক, ৫৮খ এবং ৫৮ঙ) সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন হবে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ হলো- রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই। কমিশন আশা করছে, আগামী সপ্তাহে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কীভাবে নিযুক্ত হবেন, সে বিষয়ে একটি সমাধান আসবে।
নারী প্রতিনিধিত্বের বিষয়ে সাংবিধানিক মর্যাদার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশন মনে করে বাংলাদেশের গণআন্দোলনে, বিশেষ করে গত বছরের গণঅভ্যুত্থানে নারীদের অনবদ্য ভূমিকার কথা স্মরণ করে তাদের সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদা নিশ্চিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। কমিশন মনে করে, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া অপরিহার্য।
আলী রীয়াজ আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, রাজনৈতিক দলগুলো এই বিষয়টি উপলব্ধি করবে এবং সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
এসএন