অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লজ্জাজনকভাবে ২৭ রানে অলআউট হওয়ার পর টেস্ট ক্রিকেটে মারাত্মক সংকটে পড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই বিপর্যয়ের পরই ক্যারিবীয় ক্রিকেটকে বাঁচাতে জরুরি বৈঠকে ডাক পেয়েছেন কিংবদন্তি তিন ক্রিকেটার ক্লাইভ লয়েড, ভিভ রিচার্ডস ও ব্রায়ান লারা। ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লিউআই) সভাপতি ড. কিশোর শ্যালোর আমন্ত্রণে এই ‘ক্রাইসিস সামিট’-এ যোগ দেন তারা।
সাবেক বিশ্বজয়ী অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড এই বৈঠকে স্পষ্ট করেই বলেছেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটকে বাঁচাতে হলে তৃণমূল থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পর্যন্ত প্রতিটি দিক খুঁটিয়ে দেখতে হবে।
সবকিছু নতুন করে মূল্যায়ন করা জরুরি।’
স্যাবাইনা পার্কে ২৭ রানে অলআউট হয়ে ওয়স্ট ইন্ডিজ এক বলের জন্য রক্ষা পেয়েছে ১৯৫৫ সালে নিউজিল্যান্ডের করা সর্বনিম্ন ২৬ রানের রেকর্ড থেকে। এমন লজ্জাজনক পারফরম্যান্সের পর লয়েডের মতে, এখনই সময় নতুন করে গোড়া থেকে পরিকল্পনা সাজানোর।
লয়েড বলেছেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট একটি ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠান।
এই অঞ্চলকে এটি অনেক গৌরব এনে দিয়েছে। এখন আমাদের দায়িত্ব, এটিকে আবার জাগিয়ে তোলা। আমি সবসময় সাহায্যের জন্য প্রস্তুত।’
দলের ব্যাটিং দুর্বলতা নিয়েও কড়া সমালোচনা করেন লয়েড।
তার মতে, ব্যাটারদের ‘উইকেটের মূল্য’ বোঝা উচিত। তিনি বলেন, ‘আমাদের কয়েকজন ল্যারি গোমসের মতো ব্যাটার দরকার, যারা উইকেটে দাঁড়িয়ে লড়াই করবে। সুন্দর খেলার দরকার নেই, দরকার টিকে থাকার মানসিকতা।’
ব্যাটিং ছাড়াও মাঠের বাইরের সমস্যার দিকেও ইঙ্গিত দেন তিনি। ‘স্কুল, ক্লাব, ফার্স্ট-ক্লাস ক্রিকেট সবকিছুই এখন প্রশ্নের মুখে।
খেলোয়াড়দের মানসিকতা থেকে শুরু করে দেশের পিচ প্রস্তুতির মান, সবকিছুই পর্যালোচনার প্রয়োজন আছে।’
সিরিজে ব্যাট হাতে কিছুটা আলোর রেখা দেখিয়েছেন কেবল ব্র্যান্ডন কিং, যার গ্রেনাডায় ৭৫ রানের ইনিংস ছিল সিরিজের সর্বোচ্চ। বাকি সবাই ছিলেন একেবারে নিষ্প্রভ। কোচ ড্যারেন স্যামিও স্বীকার করেছেন, ব্যাটাররা দীর্ঘ ইনিংস খেলতে না পারলে দ্রুত রান তুলতে চায়। তবে ক্লাইভ লয়েডের মতে, তাতেও সফলতা আসবে না যদি ইনিংস গঠনের মূল চর্চা ও ধৈর্য না থাকে।
সবশেষ তিনটি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেই অষ্টম হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সামনে তাদের অপেক্ষা করছে ভারতের ও নিউজিল্যান্ডের কঠিন সফর।
এই কঠিন সময়ে ১৯৭৫ সালের বিশ্বকাপ জয়কে স্মরণ করে লয়েড বলেন, ‘৫০ বছর আগে আমরা বিশ্বসেরা ছিলাম। আজ আমাদের সেই ঐতিহ্য রক্ষা করতেই লড়তে হবে। এখনই সময় নতুন করে শুরু করার।’
এসএন