রাজধানীর মোহাম্মদপুরে চাঞ্চল্যকর আল-আমিন হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামি মো. মোশারফ হোসেন (২৬) ও মো. রিপন ওরফে গিট্টু রিপনকে (২৪) মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২ ও র্যাব-৮ এর যৌথ আভিযানিক দল।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাতে ভোলা জেলার চরফ্যাশন থানাধীন বেতুয়া লঞ্চঘাট এলাকা থেকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার (১৯ জুলাই) র্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) খান আসিফ তপুর পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, নিহত আল-আমিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। তিনি সম্প্রতি শেরেবাংলা নগর এলাকায় একটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত মোশারফের ছোট ভাই মান্নানকে গ্রেফতারে সহায়তা করেছিলেন। এই ঘটনার জেরে মোশারফ ও রিপনসহ কিশোর গ্যাংয়ের আরও কয়েকজন সদস্য পরিকল্পনা করে ১৬ জুলাই সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় আল-আমিনের ওপর নৃশংস হামলা চালায়।
হত্যার দিন ভিকটিম আল-আমিন একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ঠিক সেই সময় আসামিরা সংঘবদ্ধভাবে ধারালো অস্ত্র নিয়ে অতর্কিতে তার ওপর হামলা চালায়। তাকে কুপিয়ে ডান পায়ের হাঁটুর রগ কেটে ফেলা হয় এবং ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল কেটে নেয়া হয়। স্থানীয়রা ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় আল-আমিনকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন নিহতের মা বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
র্যাব জানায়, এক নম্বর আসামি মোশারফ পেশায় রিকশাচালক হলেও সে মোহাম্মদপুরের কিশোর গ্যাংয়ের লিডার হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। এর আগেও একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হলেও জামিনে বেরিয়ে আবার অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।
অন্যদিকে ২ নম্বর আসামি রিপন ওরফে গিট্টু রিপন পেশায় রংমিস্ত্রি হলেও বাস্তবে সে মোশারফের সহচর হিসেবে অপরাধচক্রে সক্রিয় ছিল।
র্যাব জানায়, গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য অপরাধ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, যা যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। একইসঙ্গে মোহাম্মদপুরসহ আশপাশের এলাকায় কিশোর গ্যাং এবং সন্ত্রাস দমনে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানায় র্যাব।
কেএন/টিএ