রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাথমিক শাখার ঠিক পাশেই সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার সময় ক্লাস চলছিল প্রাথমিক শ্রেণির শিশুদের। হঠাৎ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে স্কুল ভবন। আর ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক শিশুরা ভয়ে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে, অনেকেই ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে দৌড়ে মাঠে চলে আসে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাইলস্টোন কলেজের মূল ক্যাম্পাসের উত্তর পাশে খেলার মাঠ ঘেঁষা অংশেই বিমানটি পড়ে। পাশেই অবস্থিত প্রাইমারি শাখার ভবন। দুর্ঘটনার পরপরই ছুটে আসেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা। অনেক মা-বাবাকে গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে সন্তানদের নাম ধরে ডেকে কাঁদতে দেখা যায়।
বিমান বিধ্বস্ত হওয়া ভবনটিতে ছিল ১০০ থেকে ১৫০ শিক্ষার্থী
নাবিলা নামের কলেজ শাখার এক শিক্ষার্থী বলেন, বিকট শব্দ হতেই ক্লাসের শিশুরা ভয় পেয়ে চিৎকার শুরু করে। আমরা বুঝে উঠতে পারছিলাম না— কী হয়েছে? জানালার পাশে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিল। কিছু শিক্ষার্থী দৌড়ে নিচে নেমে যায়। বাচ্চারা ভেতরেই ছিল৷ কেউ বের হতে পারেনি।
ফারজানা হক নামের এক অভিভাবক বলেন, হঠাৎ একটা বড় আওয়াজ হলো। তাকিয়ে দেখি ধোঁয়া উঠছে। স্কুলের পাশেই আগুন আর ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিল। শিশুদের কাঁদতে দেখেছি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরপরই এলাকার নিরাপত্তার বাড়ানো হয়েছে৷ ছোট-ছোট শিশুদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্কুল কর্তৃপক্ষ একসঙ্গে কাজ করেছে।
অন্যদিকে, উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে অন্তত ৩৫ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. অমল কান্তি নাথ। তিনি বলেন, আহতদের মধ্যে যারা কম গুরুতর, তাদের হাসপাতালেই রাখা হয়েছে। তবে যারা এসেছেন, সবার শরীরেই দগ্ধ হওয়ার চিহ্ন রয়েছে।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
এসএন