স্বাস্থ্যগত জটিলতায় চিকিৎসকের পরামর্শে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। সোমবার দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপের পদত্যাগের এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগপত্রে তিনি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদ ছেড়ে এখন নিজের স্বাস্থ্যকে ‘‘অগ্রাধিকার’’ দেবেন বলে উল্লেখ করেছেন।
দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তার পদত্যাগ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। পদত্যাগপত্রে ধনখড় লিখেছেন, আমি স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার দেওয়া ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলার জন্য ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সংবিধানের ৬৭(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পদত্যাগ করছি। আমার এই পদত্যাগ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
চিঠিতে তিনি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘আমার মেয়াদকালে আপনার অবিচল সহানুভূতি ও হৃদ্যতাপূর্ণ কর্মসম্পর্কের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।’’
তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা ও সমর্থন অমূল্য ছি। এই দায়িত্ব পালনকালে আমি অনেক কিছু শিখেছি।’’
পাশাপাশি তিনি লেখেন, "সকল মাননীয় সংসদ সদস্যের কাছ থেকে আমি যে আস্থা এবং স্নেহ পেয়েছি তা সর্বদা আমার স্মৃতিতে লালিত থাকবে। আমাদের মহান গণতন্ত্রে উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে আমি যে অমূল্য অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি তার জন্য আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।"
উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় বলেছেন, এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভারতের অসাধারণ অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং অভূতপূর্ব সূচকীয় উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করা এবং তাতে অংশগ্রহণ করাটা সৌভাগ্য এবং তৃপ্তির বিষয়। দেশের ও জাতির ইতিহাসের এই পরিবর্তনের সময় আমি দেশের সেবা করতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। এই পদ ত্যাগ করার সঙ্গেই ভারতের বিশ্বব্যাপী উত্থান এবং অসাধারণ সাফল্যে আমি গর্বিত ও দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতি অটল আস্থা রাখছি।
১৯৮৯ সালে রাজস্থানের ঝুনঝুনু সংসদীয় আসন থেকে নবম লোকসভায় নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৯০ সালে কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন। ১৯৯৩-১৯৯৮ সালে আজমির জেলার কিষাণগড় নির্বাচনী এলাকা থেকে রাজস্থান বিধানসভায় নির্বাচিত হন।
লোকসভা এবং রাজস্থান বিধানসভার গুরুত্বপূর্ণ কমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে ইউরোপীয় সংসদে একটি সংসদীয় দলের উপনেতার দায়িত্বেও ছিলেন জগদীপ ধনখড়। এরপর ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই থেকে ২০২২ সালের ১৮ জুলাই পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।