মৃত্যুর তিন বছর পরে নির্দোষ প্রমাণিত হলেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামাল। একইসঙ্গে আদালতে জমা দেওয়া জামিনের ৫০ লাখ টাকা কামালের পরিবারকে ফেরৎ দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৩ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দী এই আদেশ দেন। মামলায় অভিযুক্ত অন্য চারজনকেও বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন আহসান হাবিব কামালের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার সানজিদ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালসহ বিসিসির তৎকালীন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরে টাকা উত্তোলনের ঘটনায় মামলা করে দুদক। কিন্তু মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরে টাকা উত্তোলন করা হলেও তাকে আসামি করা হয়নি। এ ছাড়া সড়ক ও জনপদের একজন প্রকৌশলী অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে বলে দাবি করেছিল দুদক। কিন্তু সেই নির্বাহী প্রকৌশলী উচ্চাদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেননি। এ ছাড়া বাকি সাক্ষীদের সাক্ষ্য বিচার-বিশ্লেষণ করে মহামান্য বিচারপতি এই সিদ্ধান্তে উপনিত হন, রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। তাই পাঁচজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে ২৭ লাখ ৫৪ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন ১৯৯৫ সালে পৌর কোষাগার থেকে এই অর্থ আত্মসাত করার অভিযোগ তোলা হয়। দুদুকের দায়ের করা মামলায় ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর সাত আসামির মধ্যে দুইজনকে খালাস দিয়ে সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালসহ পাঁচজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ১ কোটি টাকা জরিমানা করেন বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
রায়ের প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের ১৬ জুলাই পর্যন্ত আট মাস কারাগারে থাকেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হলে ৫০ লাখ টাকার জামিননামায় তাকে মুক্তির নির্দেশ দেন আদালত। নির্দেশনা অনুযায়ী ৫০ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার পরও কামালের মুক্তি পেতে তিন মাসেরও বেশি সময় লেগে যায়।
উচ্চ আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় ২০২২ সালের ৩০ জুলাই ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। আহসান হাবিব কামাল বরিশাল দক্ষিণ জেলা ও মহানগর বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির মৎস্যজীবীবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯১ সাল থেকে বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান ও প্রশাসকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ২০০২ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশনে উন্নীত হলে প্রথম ভারপ্রাপ্ত মেয়র মনোনীত হন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শওকত হোসেন হিরণকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি।
কেএন/টিএ