জেলেনস্কির সঙ্গে যে শর্তে আলোচনায় বসবেন পুতিন

টানা তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের কোনো লক্ষণ এখনও দৃশ্যমান নয়। একের পর এক ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দখল করে এগিয়ে যাচ্ছে রুশ সেনারা। যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিক মহলের নানা উদ্যোগ ও মধ্যস্থতা চললেও মুখোমুখি হননি দুই দেশের শীর্ষ নেতা—ভ্লাদিমির পুতিন ও ভলদিমির জেলেনস্কি।

ইউক্রেন বেশ কয়েকবার বৈঠকের প্রস্তাব দিলেও রাশিয়া ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। এবার তৃতীয় দফা শান্তি আলোচনা শেষে রাশিয়া বৈঠকে বসার বিষয়ে স্পষ্ট শর্ত জুড়ে দিয়েছে।

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা পর্বের অন্যতম আলোচিত বিষয় ছিল পুতিন-জেলেনস্কি মুখোমুখি বৈঠকের সম্ভাবনা। আলোচনার পর রাশিয়ার প্রধান প্রতিনিধি ভ্লাদিমির মেদিনস্কি বলেন, “শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক তখনই অর্থবহ হবে, যদি তা কোনো চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে হয়।”

তিনি আরও বলেন, “শুধু আলোচনার জন্য বা অগ্রগতি ছাড়াই মুখোমুখি হওয়া কেবল সময় ও কূটনৈতিক শক্তির অপচয়।”

 জেলেনস্কি জানান, ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদের তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—যদি চুক্তির উপযোগী পরিবেশ তৈরি না হয়, তবে শীর্ষ বৈঠক কেবল প্রতীকী হয়ে থাকবে এবং কোনো বাস্তব ফলাফল বয়ে আনবে না।

এর আগে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও আলোচক দলের প্রধান রুস্তেম উমের প্রস্তাব দেন, চলমান অচলাবস্থা নিরসনে আগস্ট মাসে পুতিন ও জেলেনস্কির সরাসরি বৈঠক হওয়া উচিত। তবে মস্কোর প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট, প্রতীকী বৈঠকের মাধ্যমে এই যুদ্ধ থামানো সম্ভব নয়।

ইতিহাসের উদাহরণ টেনে মেদিনস্কি স্মরণ করিয়ে দেন ১৯৪০-এর দশকের চীনা গৃহযুদ্ধের কথা, যেখানে চিয়াং কাইশেক ও মাও সেতুং একাধিকবার মুখোমুখি হলেও যুদ্ধ বন্ধ হয়নি। তার মতে, “হাসিমুখে বসে ছবি তুললেই শান্তি আসে না। প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট শান্তি কাঠামো।”

ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভও একই সুরে বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত আলোচনা প্রক্রিয়ায় একটি নির্দিষ্ট চুক্তির খসড়া না আসে, ততক্ষণ শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকের সম্ভাবনা নেই।”

যদিও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেলেনস্কির বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন, তবে গত মাসে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন—যদি আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়, তবে বৈঠকে অংশ নিতে তিনি রাজি আছেন।

ইউটি/টিএ


Share this news on:

সর্বশেষ

img
ক্ষমতা পরিবর্তনের ভয় না থাকলে সরকার দানবীয় হয়ে ওঠে : আসিফ নজরুল Jul 26, 2025
img
ব্যাংক খাতের ৮০ শতাংশ অর্থ নিয়ে গেছে, যা পুনর্গঠনে লাগবে ৩৫ বিলিয়ন ডলার : অর্থ উপদেষ্টা Jul 26, 2025
img
ভোলায় নামতে শুরু করেছে জোয়ারের পানি, স্বাভাবিক হচ্ছে ফেরি চলাচল Jul 26, 2025
img
পদত্যাগ দাবিতে মালয়েশিয়াজুড়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ Jul 26, 2025
img
বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়ার অদম্য পথযাত্রার সূচনা করেছে জুলাই অভ্যুত্থান : বাণিজ্য উপদেষ্টা Jul 26, 2025
আমিরাতে ভিসা বন্ধ, ধসে পড়ছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ট্যুরিজম সাম্রাজ্য! Jul 26, 2025
নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এআই প্রযুক্তি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ Jul 26, 2025
img
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ছবিগুলো তাসনিয়া ফারিণের নয় Jul 26, 2025
img
দিয়াগো জোতার স্মরণে অ্যানফিল্ডে স্থায়ী ভাস্কর্য Jul 26, 2025
আমেরিকার প্রযুক্তি জায়ান্টদের ট্রাম্পের কড়া হুঁশিয়ারি Jul 26, 2025
img
৬০ কেজি গাঁজাসহ ছয় মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার Jul 26, 2025
img
মানবাধিকারকে একটি সংস্কৃতি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, শুধু আইনে হবে না : আসিফ নজরুল Jul 26, 2025
img
ইরানে বিচার বিভাগের ভবনে হামলা : নিহত বেড়ে ৮ Jul 26, 2025
img
রোববারও বন্ধ মাইলস্টোন, কলেজ খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত সোমবার Jul 26, 2025
img
দেবের মাথায় কালো রঙের গুচি টুপি, দাম জানলে চমকে যাবেন! Jul 26, 2025
img
দুই শিক্ষার্থীকে রিলিজ দেওয়া হচ্ছে, ভর্তি আছে ৩৬ জন : বার্ন ইনস্টিটিউট Jul 26, 2025
img
সারা দেশে ২৪ ঘণ্টায় বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১৬৪১ জন Jul 26, 2025
img
ডেঙ্গুতে ২৪ ঘন্টায় ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৩১ Jul 26, 2025
img
ওয়াকফ এস্টেটগুলোকে ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনা হচ্ছে : ধর্ম উপদেষ্টা Jul 26, 2025
img
এনবিআর ভাগ করলেই সমস্যার সমাধান হবে না : এনবিআর চেয়ারম্যান Jul 26, 2025