প্রাক্তন বিশ্ব সুন্দরী এবং বলিউড অভিনেত্রী সুস্মিতা সেন দীর্ঘকাল ধরে স্বাস্থ্য সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন। ২০১৪ সালে তার শরীরে ধরা পড়ে এক বিরল ও গুরুতর রোগ, 'অ্যাডিসনস ডিসিজ'। এই অটোইমিউন রোগে শরীরের অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হরমোন কর্টিসল উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে পড়েছিল যে চিকিৎসকরা সুস্মিতাকে জানিয়েছিলেন, জীবন বাঁচাতে হলে তাকে সারা জীবন প্রতি আট ঘণ্টা অন্তর হাইড্রোকর্টিসোন নামক একটি স্টেরয়েড ওষুধ সেবন করতে হবে।
এই কঠিন পরিস্থিতিতে ভেঙে না পড়ে সুস্মিতা বরং আরও দৃঢ়সংকল্প হন। তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নিজের শরীরকে সুস্থ করে তোলার জন্য জোর দেন নিয়মিত শরীরচর্চা, যোগব্যায়াম, এরিয়াল ফিটনেস এবং ডিটক্স প্রোগ্রামের উপর। ডাক্তারদের প্রাথমিক নিরুৎসাহ সত্ত্বেও সুস্মিতা নিজের শরীরের উপর আস্থা রেখে এই পথেই এগিয়ে যান।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, "যদি তুমি আমার শক্তি কেড়ে নাও, তাহলে আমি আর কে?" এই উক্তিটি তার অদম্য মনোবল ও লড়াই করার ইচ্ছাকেই তুলে ধরে। নিজের শরীর ও মনের উপর নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনার এই নিরন্তর প্রচেষ্টা তিনি চালিয়ে যান।
তার এই অবিচল লড়াইয়ের ফলস্বরূপ একসময় চিকিৎসকরাও অবাক হয়ে লক্ষ্য করেন যে সুস্মিতার শরীর নিজে থেকেই কর্টিসল তৈরি করা শুরু করেছে। এই অবিশ্বাস্য উন্নতির পর তাকে জানানো হয় যে তার আর স্টেরয়েড ওষুধের প্রয়োজন নেই। অ্যাডিসনস ডিসিজে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা অত্যন্ত বিরল এবং চিকিৎসকরাও এই ধরনের সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধারের উদাহরণ খুব কমই দেখেছেন।
আজ সুস্মিতা সেন কেবল একজন সফল অভিনেত্রীই নন, জীবনের কঠিনতম লড়াইয়েও তিনি একজন সত্যিকারের নায়িকা। তাঁর অদম্য ইচ্ছাশক্তি, অধ্যবসায় এবং আত্মবিশ্বাস প্রমাণ করে দিয়েছে যে সুদৃঢ় মনোবলের কাছে কঠিনতম অসুখও হার মানতে বাধ্য।
এমআর