ভারতের অন্যতম বৃহৎ অটো পার্টস কোম্পানি সোনা বিএলডব্লিউ প্রিসিশন ফোরজিংস লিমিটেড (সোনা কমস্টার)-এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে কোম্পানির চেয়ারম্যান সঞ্জয় কাপুরের আকস্মিক মৃত্যুর পর। খবর গালফ নিউজ
১২ জুন যুক্তরাজ্যের উইন্ডসরে একটি পলো ম্যাচ চলাকালীন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৩ বছর বয়সে মারা যান সঞ্জয়। মৃত্যুর এক মাসের মাথায়, তার মা রানী কাপুর প্রকাশ্যে অভিযোগ তুলেছেন, পরিবারের সম্পদ ও কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নিতে তাকে মানসিকভাবে চাপে ফেলা হয়েছে।
২৪ জুলাই বোর্ড ও শেয়ারহোল্ডারদের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে রানী কাপুর অভিযোগ করেন, ‘আমি যখন আমার একমাত্র ছেলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া নিয়ে শোকাহত, সেই সময় আমাকে তালাবদ্ধ ঘরে নিয়ে গিয়ে অজানা কাগজে সই করানো হয়।’
তিনি দাবি করেছেন, ‘ড. সুরিন্দর কাপুরের (সোনা কমস্টারের প্রতিষ্ঠাতা) উইল অনুযায়ী তিনিই পরিবার ও ব্যবসার প্রকৃত উত্তরাধিকারী। তার অভিযোগ, কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ তাকে সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে এবং ‘ভুয়া প্রতিনিধিদের’ মাধ্যমে এজিএম আয়োজন করেছে।
রানীর অভিযোগের পাল্টা জবাবে সোনা কমস্টার এক নিয়ন্ত্রক বিবৃতিতে জানায়, ‘রানী কাপুর ২০১৯ সালের পর থেকে কোম্পানির কোনো শেয়ারধারী নন। এজিএম’র আয়োজন সম্পূর্ণ আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই হয়েছে।’
২৫ জুলাই কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়, রানী কাপুরের আপত্তি সত্ত্বেও। সভায় শেয়ারহোল্ডারদের ভোটে সঞ্জয়ের স্ত্রী প্রিয়া সচদেব কাপুরকে নন-এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তাকে সিএসআর কমিটির চেয়ারপারসন এবং ইএসজি কমিটির সদস্যও করা হয়েছে।
প্রিয়ার এই মনোনয়ন আসে অরিয়াস ইনভেস্টমেন্টস প্রা. লি. থেকে, যা কোম্পানির অন্যতম বড় অংশীদার (২৮.০২ শতাংশ) এবং সঞ্জয়ের মালিকানাধীন আরকে ফ্যামেলি ট্রাস্ট’র সঙ্গে জড়িত।
সঞ্জয় ছিলেন আরকে ফ্যামিলি ট্রাস্টের একমাত্র উত্তরাধিকারী, যা অরিয়াস ইনভেস্টমেন্টসের বড় অংশের মালিক। ফলে প্রিয়া আইনি দিক থেকে বর্তমানে কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ কর্তৃত্ব ধরে রেখেছেন। তবে রানী কাপুর যদি ট্রাস্ট সংক্রান্ত মামলায় যান, তাহলে মালিকানা নিয়ে বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
এই উত্তরাধিকার বিরোধ ও নেতৃত্ব সংকটের জেরে সোনা কমস্টারের শেয়ারদর ৫২ সপ্তাহের সর্বোচ্চ ৭৬৮.৬৫ রুটি থেকে প্রায় ৩৬ শতাংশ কমে গেছে। এতে করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়ছে।
কেএন/টিকে