জেএফ-১৭ থান্ডার যুদ্ধবিমান কিনতে চায় বাংলাদেশ, আপত্তি ভারতের

পাকিস্তানের তৈরি জেএফ-১৭ থান্ডার যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে গত জানুয়ারি থেকেই আলোচনা চলছে। বাংলাদেশের একটি সামরিক প্রতিনিধি দল জানুয়ারিতে পাকিস্তান সফরে গিয়ে দেশটির বিমান বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে যুদ্ধবিমান কেনার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করে। প্রতিনিধি দলটি জানায়, বাংলাদেশ, পাকিস্তান-চীন যৌথভাবে তৈরি অত্যাধুনিক মাল্টি রোল যুদ্ধবিমান জেএফ-১৭ থান্ডার সংগ্রহ করতে চায়। 

তবে এই উদ্যোগে আপত্তি জানিয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। ভারতের মতে, এটি শুধু সাধারণ যুদ্ধবিমান কেনাকাটার বিষয় নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা কাঠামোর জন্য একটি বড় ঝুঁকি। ভারতের নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক সহযোগিতা বাড়লে তা কৌশলগত দিক থেকে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।

এদিকে সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর পুরনো যুদ্ধবিমান ব্যবহারের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে। ওই দুর্ঘটনায় অন্তত ৩১ জন নিহত এবং দেড় শতাধিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। এই দুর্ঘটনার পর থেকেই সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে—কেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনী এখনো পুরনো এবং ঝুঁকিপূর্ণ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছে? কেন আধুনিক যুদ্ধবিমান সংগ্রহ করা হচ্ছে না?

এই প্রেক্ষাপটেই জেএফ-১৭ থান্ডার কেনার উদ্যোগ আবারও আলোচনায় উঠে আসে। পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, বাংলাদেশের সামরিক কর্মকর্তারা জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান কেনার ব্যাপারে "গভীর আগ্রহ" দেখিয়েছেন।

জেএফ-১৭ থান্ডার একটি হালকা, এক ইঞ্জিনবিশিষ্ট মাল্টি রোল যুদ্ধবিমান। এটি দিন-রাত ও সব ধরনের আবহাওয়ায় হামলা চালাতে সক্ষম।

বিমানটি পাকিস্তানের এরোনটিক্যাল কমপ্লেক্স এবং চীনের চেংদু এয়ারক্রাফট ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগে তৈরি। আকাশ থেকে নজরদারি, স্থল আক্রমণ এবং শত্রু বিমান প্রতিহত করার মতো বহু কাজে এটি ব্যবহৃত হয়। এর চীনা নাম এফসি-১ জিয়াওলং, যার অর্থ ‘ভয়ঙ্কর ড্রাগন’।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আধুনিক যুদ্ধবিমান কেনার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে, তবে তা বাস্তবায়নে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে।

এমআর  

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আইকন প্লেয়ারের এসবে জড়ানো উচিত না, তাসকিনকে নিয়ে বিসিবি পরিচালকের মন্তব্য Jul 28, 2025
img
অভিনেত্রীদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আগ্রহে বিরক্ত কারিনা Jul 28, 2025
img
নির্বাচনের আগে প্রশাসনে আসবে রদবদল: উপ প্রেসসচিব Jul 28, 2025
img
৫০ বছর ধরে কোরবানি দিতে পারিনি : রিয়াদের বাবা Jul 28, 2025
বাবর দেশপ্রেমিক, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অগ্রহণযোগ্য: ছাত্রনেতা রাফি Jul 28, 2025
আশুলিয়ায় সিলিন্ডার ফেটে আগুন, দগ্ধ স্বামী-স্ত্রী Jul 28, 2025
img
জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের নিবন্ধন স্থগিত করা সরকারের দায়িত্ব: রাশেদ খান Jul 28, 2025
img
বাবার কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন জসীমপুত্র রাতুল Jul 28, 2025
img
৪ দিন বন্ধ থাকার পর সেন্টমার্টিনে ট্রলার চলাচল স্বাভাবিক Jul 28, 2025
নবী যাবের (রাঃ) এর অলৌকিক কাহিনি | প্রতিদিনের ইসলামিক কার্টুন Jul 28, 2025
বারবার ভুল করতে থাকলে এক সময় সেটা অভ্যাস হয়ে যায়, সালমানকে সেলিম খান Jul 28, 2025
img
রাষ্ট্রপতির কাছে বার্ষিক প্রতিবেদন দিলেন প্রধান বিচারপতি Jul 28, 2025
এনসিপি ত্যাগের ঘোষণা দিলেন নীলা ইস্রাফিল Jul 28, 2025
ডেটা সেন্টার এখন সমুদ্রের তলায়! চীনের প্রযুক্তি বিপ্লব Jul 28, 2025
img
আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা Jul 28, 2025
img
অভ্যুত্থান না হলে আপনারা নির্বাচনের স্বপ্নই দেখতে পারতেন না: নাহিদ ইসলাম Jul 28, 2025
img
নির্বাচনে ৬০ হাজার সেনা সদস্য কাজ করবে: প্রেস সচিব Jul 28, 2025
বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন চুক্তি নিয়ে যা বললেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ Jul 28, 2025
জাতীয় ঐকমত্যে বিএনপির ওয়াক আউট Jul 28, 2025
হঠাৎ ফায়ার অ্যালার্মে জরুরি ভিত্তিতে ভবন ছাড়লেন শীর্ষ নেতারা! Jul 28, 2025