দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি কলেজে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হচ্ছে আজ বুধবার (৩০ জুলাই)। আবেদন চলবে আগামী ১১ আগস্ট পর্যন্ত। অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এবারের ভর্তি কার্যক্রমের জন্য নতুন নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, এ বছরও এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতেই ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। কোনো ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে না। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২২০ টাকা। ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের সর্বনিম্ন ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হতে পারে। এই ব্যয়ের মধ্যে কলেজভেদে ভর্তি ও সেশন ফি, রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত বোর্ড ফি এবং রেড ক্রিসেন্ট, ক্রীড়া ও অন্যান্য ফি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
নীতিমালায় অঞ্চলভেদে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর নন-এমপিও ইংরেজি ভার্সন কলেজে সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৫০০ টাকা ফি নেওয়া যাবে, যেখানে উপজেলা পর্যায়ে এমপিওভুক্ত কলেজের বাংলা ভার্সনের জন্য সর্বনিম্ন ফি ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত ফি নেওয়া যাবে না এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অবশ্যই রশিদের মাধ্যমে ফি আদায় করতে হবে।
আবেদনের যোগ্যতা নির্ধারণ করে বলা হয়েছে, যেসব শিক্ষার্থী ২০২৩, ২০২৪ বা ২০২৫ সালের মধ্যে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, তারা আবেদন করতে পারবেন। বিদেশি বোর্ডের ফলের ভিত্তিতেও ভর্তি হতে পারবে, তবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদন সাপেক্ষে।
এবারের ভর্তি নীতিমালায় ৯৩ শতাংশ আসন সব শিক্ষার্থীর জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। বাকি ৭ শতাংশের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ এবং অধীনস্থ দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে সেসব আসন মেধাক্রম অনুযায়ী ভর্তি করা হবে।
সমান জিপিএ-প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে মোট নম্বর দেখে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে। নম্বরও সমান হলে বিভাগভেদে নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যেমন- বিজ্ঞান বিভাগে গণিত, জীববিজ্ঞান ও ইংরেজি এবং মানবিক ও ব্যবসায় বিভাগে ইংরেজি, গণিত ও বাংলা বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হবে।
নিজ কলেজে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত বিভাগে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভর্তি হতে পারবে। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগের আসন পূরণ হওয়ার পর অবশিষ্ট আসনে বাইরের শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা যাবে।
ভর্তির পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনে সম্পন্ন করতে হবে এবং প্রতিটি কলেজকে নিজস্ব ওয়েবসাইট ও নোটিশ বোর্ডে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে হবে। বোর্ডের অনুমতি ছাড়া কোনো শিক্ষার্থীকে ছাড়পত্র দেওয়া বা অন্য কলেজে ভর্তি নেওয়া যাবে না। ছাড়পত্র ও ভর্তি সংক্রান্ত তথ্য বোর্ডে জমা দিতে হবে ১৫ দিনের মধ্যে।
নতুন নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, কোনো অনুমোদনহীন ক্যাম্পাস বা অননুমোদিত বিষয়ে ভর্তি কার্যক্রম চালালে সংশ্লিষ্ট কলেজের স্বীকৃতি ও এমপিও বাতিল করা হবে। সরকারি কলেজের ক্ষেত্রেও নীতিমালা লঙ্ঘন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরবর্তী ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে আবেদন গ্রহণ, মেধা তালিকা প্রকাশ, ভর্তি সম্পন্ন ও ক্লাস শুরুর কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
পিএ/এসএন