শোবিজ জগতে সৌন্দর্য যেন এক অনিবার্য চাপ। কখনও সেটি ক্যামেরার সামনে, কখনও বা ক্যামেরার পেছনের চাপিয়ে দেওয়া ‘আদর্শের’ মুখোমুখি হতে হয় নায়িকাদের। ঠিক এমনই এক অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী শোলাঙ্কি রায়। নিজের শরীর নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস দেখিয়ে আজকের এই চকচকে দুনিয়ার অন্ধকার দিকটাই যেন তুলে ধরলেন তিনি।
সম্প্রতি একটি পডকাস্টে উপস্থিত হয়ে শোলাঙ্কি জানান, এক পরিচালক তাকে পরিষ্কার ভাষায় ব্রেস্ট সার্জারি করার পরামর্শ দিয়েছিলেন, শুধু নায়িকা হয়ে ওঠার শর্ত হিসেবে। শোলাঙ্কির ভাষায়, “একবার এক অনুষ্ঠানে সেই পরিচালক বলেছিলেন, নায়িকা হতে গেলে স্তনে একটু খাঁজ থাকা দরকার। সেই কারণে ব্রেস্ট সার্জারি করতে বলেছিলেন। শুনে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম।”
যদিও শোলাঙ্কি তখন নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন, সরাসরি না বলে পাশ কাটিয়ে গিয়েছিলেন পরিস্থিতি। তবে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, সবাই এমন আত্মবিশ্বাস নিয়ে উত্তর দিতে পারেন না। “আমি তখন কিছুটা ম্যাচিওর ছিলাম। কিন্তু বয়স কম হলে বা কেউ ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন হলে সে সহজেই প্রভাবিত হয়ে যেতে পারে,” বলেন শোলাঙ্কি।
এই মন্তব্যের গভীর প্রভাব পড়ে তার মনে। যদিও প্রকাশ্যে তিনি তখন কিছু না বললেও এতদিন পর এই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে নিজের আহত মনকে লুকিয়ে রাখতে পারেননি। শোলাঙ্কি বলেন, “আমি তখন সরাসরি তাকে বলেছিলাম, সেটা আমি নিজে বুঝে নেব। তবে ভিতরে ভিতরে খুব খারাপ লেগেছিল। না হলে এতদিন পরে এই ঘটনা নিয়ে কথা বলতাম না।”
শুধু শরীর নয়, তার মুখ নিয়েও ইন্ডাস্ট্রিতে কুৎসিত মন্তব্য শুনতে হয়েছে বহুবার। কেউ বলেছেন, “টিভিতে যতটা ভালো লাগে, সিনেমায় নাকি ততটা নয়।” শোলাঙ্কির কথায়, “আমি তো কোনোদিন মুখে ইনজেকশন নিইনি।”
শোলাঙ্কি আরও জানান, তার রোগা গড়ন নিয়েও কম অপমান সহ্য করতে হয়নি। অনুষ্ঠান বা পারিবারিক জমায়েতে গেলে প্রায়ই শুনতে হয়েছে—“কেন এত শুকিয়ে গিয়েছ?” এমন প্রশ্ন এতবার শুনতে শুনতে একসময় তিনি পারিবারিক অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলতেন।
নায়িকা হওয়ার পথে কত ধরনের সামাজিক চাপ, দৃষ্টিভঙ্গি, এমনকি শারীরিক অবমাননা পেরিয়ে এগিয়ে যেতে হয়—তা নিজের গল্পেই স্পষ্ট করে দিলেন শোলাঙ্কি।
এসএন