ডিসেম্বরের আগে নীতি সুদহার কমানোর সম্ভাবনা নেই : গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে না নামা পর্যন্ত নীতি সুদহার কমানো হবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। এর পরই নীতি সুদ কমানোর বিষয়ে ভাবা যেতে পারে।’


বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে গভর্নর এসব কথা বলেন।


গভর্নর বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা। জুলাই পর্যন্ত গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৮.২ শতাংশ। আমরা চাই, এটা ধীরে ধীরে ৬.৫ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে নেমে আসুক।’

তিনি বলেন, ‘যদি আমরা এখনই সুদহার কমাই, তাহলে মূল্যস্ফীতি পুনরায় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে।

ফলে সুদের বিষয়ে আমরা রক্ষণশীল অবস্থানেই থাকছি।’

বর্তমানে দেশে বিনিয়োগের হার নিম্নমুখী। এ বিষয়ে গভর্নর বলেন, ‘সার্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের কারণে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি কমে গেছে। তবে তা সত্ত্বেও আমরা আশা করছি প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হবে না।

অর্থনৈতিক কাঠামো এখনো স্থিতিশীল রয়েছে।’

তিনি জানান, সরকারের অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন, কৃষি ও রপ্তানিমুখী শিল্পে উৎপাদন অব্যাহত থাকলে প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় থাকবে।

উচ্চ সুদ নীতির কারণ ও প্রভাব

২০২৪ সালের জুন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘মার্কেট বেইজড’ ইন্টারেস্ট রেট চালু করেছে, যার ফলে বর্তমানে ব্যাংক ঋণের গড় সুদহার দাঁড়িয়েছে ১৩-১৪ শতাংশে। এ বিষয়ে গভর্নর বলেন, ‘উচ্চ সুদের কারণে ব্যবসায়ীরা কিছুটা চাপ অনুভব করছেন, তবে এটি মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যই করা হয়েছে। সময়মতো ফল মিলবে।

ড. মনসুর বলেন, ‘আমরা ২০২৬ সালের মধ্যে দেশে একটি সুসংহত মুদ্রানীতি কাঠামো নিশ্চিত করতে পারব বলে আশা করছি। তখন মূল্য স্থিতি ফিরে আসবে এবং বিনিয়োগও পুনরুজ্জীবিত হবে।’

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কড়াকড়ি নীতিকে সময়োপযোগী বলা যায়, তবে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত না হলে দীর্ঘ মেয়াদে প্রবৃদ্ধি টেকসই হবে না।

এমআর/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ৩ বিভাগে অতি ভারী বৃষ্টির আভাস Aug 02, 2025
img
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২৪ ঘণ্টায় ৮৩ ফিলিস্তিনি নিহত Aug 02, 2025
img
জাবির নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে নিহত শ্রমিক, তদন্তের দাবি উপাচার্যের Aug 02, 2025
img
গণতন্ত্র এখনো পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠা হয়নি : আমিনুল হক Aug 02, 2025
img
চমকে দিলেন রোহিত শেঠি, ফিরছে অজয় দেবগণের ‘গোলমাল ৫’ Aug 02, 2025
img
ঢাকায় সমাবেশে অংশ নিতে ২০ বগির ট্রেন ভাড়া নিয়েছে চট্টগ্রাম ছাত্রদল Aug 02, 2025
img
‘রাঞ্জনা’তে ধনুশ নয়, প্রথম পছন্দ ছিলেন রণবীর! Aug 02, 2025
'আ.লীগকে ছাড় দেয়া যাবে না' বললেন মুগ্ধের বাবা Aug 02, 2025
img
প্রেমে হেরে, অভিনয়ে জিতে বলিউড মাতাচ্ছেন তৃপ্তি ডিমরি Aug 02, 2025
img
বক্স অফিসে ঝড় তুলেছে বিজয়ের ‘কিংডম’, প্রেমভরা বার্তায় রাশ্মিকা Aug 02, 2025
img
সনদ চাইনি, আমাদের জুলাই ঘোষণা কোথায়: ফরহাদ মজহার Aug 02, 2025
img
জনপ্রিয়তা বাড়াতে বিপিএলের হোম-অ্যাওয়ে পথে হাঁটতে চায় বিসিবি Aug 02, 2025
img
দ্রুতই চালু হবে চট্টগ্রামের ইনডোর: ফাহিম Aug 02, 2025
img
আগামী ২৫ আগস্ট তিস্তা সেতুর উদ্বোধন Aug 02, 2025
img
হরিপুর সীমান্তে আটক ৩ বাংলাদেশিকে ফেরত দিল বিএসএফ Aug 02, 2025
img
লন্ডনে লোকাল বাসের অপেক্ষায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান Aug 02, 2025
img
পাকিস্তান-চীন সম্পর্ক অদ্বিতীয়, পরীক্ষিত ও অটুট : মন্তব্য পাক সেনাপ্রধানের Aug 02, 2025
img
সিলেটে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে আহত ২৮ Aug 02, 2025
img
ঢাকায় আ. লীগ সহ অঙ্গ সংগঠনের ৮ নেতাকর্মী গ্রেফতার Aug 02, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে ৬১ বাংলাদেশিকে Aug 02, 2025