বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে আরোপিত পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে আনায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (১ আগস্ট) জুলাই শহীদদের স্মরণে রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে বিএনপির সমাবেশে বক্তৃতা করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ কমিয়ে আনতে উপদেষ্টাদের প্রচেষ্টার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এটা একটি বড় অর্জন।’
জুলাই আন্দোলনের শহীদদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করে পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হবে। যদিও সরকার পুরোপুরি সেটা করতে পারেনি, তবে উদ্যোগ নিয়েছে—এ জন্যও ধন্যবাদ জানাই।’
ফখরুল বলেন, ‘মানুষ এখন আর স্লোগান দেখতে চায় না, মানুষ দেখতে চায় সঠিক কাজটা হচ্ছে কি না। বাংলাদেশের ভালোর জন্য কাজ করছে কি না।’
গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা এমন একটি গণতন্ত্র চাই, যেখানে মানুষ মুক্তভাবে মত প্রকাশ করতে পারবে, নিজেদের প্রতিনিধি নিজেরাই নির্বাচিত করতে পারবে। দিনের ভোট রাতে, ডামি ভোট, ইচ্ছেমতো ব্যবসা-বাণিজ্য ও ব্যাংক লুটের রাজনীতি আর চাই না।’
তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার ভিত্তিতে বিএনপি দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রত্যাশা করছে। ‘নির্বাচনটি আমরা চাই। দেশের মানুষও চায়। আমাদের একটি সংসদ দরকার, যেখানে জনগণের কথা বলা যাবে,’ বলেন ফখরুল।
আওয়ামী লীগের শাসনামলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ভয়ংকর একটা ফ্যাসিবাদ থেকে আমরা আপাতত মুক্তি পেয়েছি। এই মুক্তি তখনই চূড়ান্ত হবে, যখন আমরা তাদের রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করতে পারব। আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা এ দেশকে ধ্বংস করেছে, তাদের প্রতি ঘৃণা তৈরি করুন। তারা যেন আর কোনোদিন ফিরে আসতে না পারে, ফিরে এসে যাতে আমাদের ছেলেদের হত্যা করতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এত তাড়াতাড়ি শহীদদের ভুলে যাবেন না। যারা বাংলাদেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে, একটা সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য–তাদের কথা একবার ভালো করে মনে করেন। এই বোধ-অনুভূতিটা যদি না আসে, তাহলে আপনি এই দেশে জন্য কিছু করতে পারবেন না। এই দেশকে বদলাতে হবে।
আক্ষেপ করে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের ছেলেদের এত আত্মত্যাগ, আমাদের মানুষের এত আত্মত্যাগ–তার বিনিময়ে দেশে অস্থিরতা যখন দেখতে পাই, তখন খুব কষ্ট হয়। আমরা চাই সবাই মিলে সুন্দর একটা বাংলাদেশ গড়ব।’
এমআর/টিকে