গেলো বছরের জুলাই-আগস্টে সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলায় হয়েছে ৩৫১টি, যার মধ্যে হত্যা মামলা ২১৪টি। ওই বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক বছর ধরে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন।
সোমবার (৪ জুলাই) রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে টিআইবির সম্মেলন কক্ষে ‘নতুন বাংলাদেশ: কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন পরবর্তী এক বছরের ওপর পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন সংস্থাটির গবেষক শাহজাদা আকরাম ও জুলকারনাইন।
টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কার থেকে শুরু করে সরকার পতনের এক দফা দাবির আন্দোলনে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ২০ হাজার।
নিহত ও আহতের ঘটনায় বিচারের দাবি নিয়ে সারাদেশের বিভিন্ন থানায় ও আদালতে প্রায় ১ হাজার ৬০২টি মামলা হয় শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নামে। এর মধ্যে হত্যা মামলা হয়েছে ৬৩৮টি- ট্রান্সপ্যারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এছাড়া জুলাই আগস্টের ঘটনায় দেড় হাজার মামলার মধ্যে মাত্র ৬০ থেকে ৭০টি মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে আছে। আর ৭০ শতাংশ মামলার তদন্তে সন্তোষজনক অগ্রগতি হয়েছে। তবে এসব মামলা নিয়ে বাণিজ্যের ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। পূর্বশক্রতা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করা এবং চাঁদাবাজি ও হয়রানি করতে অনেককে আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে। আবার মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার নামে চাঁদাবাজির অভিযোগও রয়েছে।
এছাড়া চাপের মুখে তদন্ত শেষ না করে মামলা গ্রহণ, বিভিন্ন জনের গ্রেপ্তার নিয়ে লুকোচুরি, একাধিকবার একেক জায়গা থেকে গ্রেপ্তারের সংবাদ দেয়ার কথাও বলা হয়েছে টিআইবির এ প্রতিবেদনে।