ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, সংস্কারকাজ অসম্পন্ন ও অনিশ্চিত অবস্থায় রেখে সরকার নির্বাচন আয়োজনে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, ২৪-এর জুলাই অভ্যুত্থানের প্রধান চাওয়া সংস্কার বিষয়ে কোনো সুরাহা এখনো হয় নাই। সংস্কার নিয়ে অনেক আলোচনা হলেও জুলাই সনদ যা জুলাই অভ্যুত্থানের আইনি রক্ষাকবচ তা এখনো ঘোষণা করা হয়নি। কবে নাগাদ তা করা হবে তাও অনিশ্চিত হয়ে আছে।
আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেছেন।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, জুলাইয়ের প্রধান দাবি স্বৈরতন্ত্রের পুনরাবৃত্তি রোধকল্পে পরীক্ষিত পদ্ধতি নিম্নকক্ষ পিআর নিয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এমনকি এজেন্ডাও তোলা হয়নি। সংস্কারকে এমন অসম্পন্ন ও অনিশ্চিত অবস্থায় রেখে সরকার নির্বাচন আয়োজনের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, আজকের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে নির্বাচনকে মূখ্য করে অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করা হয়েছে। নির্বাচনকে প্রধানকাজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করছে, গত ৫ আগস্টের পর আজকের দিনটি সংস্কারের জন্য সবচেয়ে নিকষ দিন; যেদিন সংস্কার ও সংস্কারকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার মিশনকে প্রায় আনুষ্ঠানিকভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ৫ আগস্ট জুলাই ঘোষণা ও প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর গতকাল দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সেই প্রতিক্রিয়ায় প্রায় সবাই এবং বিশেষ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করা ও তার ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন আয়োজন করার দাবি জানিয়েছে। পিআর নিয়ে যৌক্তিক সমাধান করার কথা বলেছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, আজকের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও প্রস্তাবনাকে আমলে নেওয়া হবে। কিন্তু হতাশার সাথে দেখা যাচ্ছে, উপদেষ্টা পরিষদ দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও প্রস্তাবনাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে যেনতেন নির্বাচন আয়োজন করে দায় সারতে উন্মুখ হয়ে আছে। এটা জাতিকে হতাশ করেছে।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান এই সরকারের ভিত্তি মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, এই সরকার কোনো নির্বাচনকালীন সরকার না। বরং এই সরকার রাষ্ট্র, সমাজ, প্রশাসন ও রাজনীতি থেকে ৫৪ বছরের জঞ্জাল দূর করার তাকিদ থেকে সৃষ্ট গণঅভ্যুত্থানের ফলে গঠিত সরকার। নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে। তবে তা হতে হবে জুলাই সনদের ভিত্তিতে।
সেই জুলাই সনদের বিষয়ে কোনো সুরাহা না করেই নির্বাচনের প্রতি যাত্রা জাতির জীবনে জুলাই অভ্যুত্থানের পুনরাবৃত্তিকে অপরিহার্য করে তুলবে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সতর্ক করছে এবং আশা করছে যে, জুলাই সনদ ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করুন। তার আইনিভিত্তি নিশ্চিত করুন এবং তারই ভিত্তিকে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন করুন।
ইউটি/টিএ