হাসিনা ও ইউনূস দ্বন্দ্বে আমি ‘বলির পাঁঠা’: টিউলিপ সিদ্দিক

বাংলাদেশে দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর নিজেকে ‘বলির পাঁঠা’ বলে অভিযোগ করেছেন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য ও প্রাক্তন ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক।

টিউলিপ বলেন, মামলাটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন তিনি। খবর গার্ডিয়ানের।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ বলেন, তিনি গত সপ্তাহে এক সাংবাদিকের মাধ্যমে জানতে পারেন, ঢাকার পূর্বাচলে জমি বরাদ্দে প্রভাব খাটানোর অভিযোগে তাকে ও আরও ২০ জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলার শুনানি ১১ আগস্ট ধার্য করা হয়েছে।

তবে টিউলিপ জানান, তিনি এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক সমন পাননি এবং অভিযোগপত্রও দেখেননি। তার ভাষ্যে, ‘আমি যেন এক অদ্ভুত দুঃস্বপ্নের মাঝে আটকে আছি, যেখানে বিচার শুরু হতে যাচ্ছে কিন্তু আমি জানি না আমার বিরুদ্ধে আসল অভিযোগ কী।’

বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বলছে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায় প্রয়োজনে তার অনুপস্থিতিতেই বিচার হতে পারে।

টিউলিপ বলেন, গত বছরের জুলাইয়ে লেবার পার্টির নির্বাচনী জয় লাভের পর তিনি অর্থনৈতিক সচিব ও সিটি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন এবং তার কাজ উপভোগ করছিলেন। কিন্তু একই সময়ে বাংলাদেশে ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে শেখ হাসিনার সরকার পতন হয়। ক্ষমতা পরিবর্তনের পর অর্থনীতিবিদ ও হাসিনার দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষমতায় আসার পর তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ শুরু হয়।

প্রথমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে, যা টিউলিপ ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। পরে ২০০৪ সালে লন্ডনের কিংস ক্রসে একটি ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার অভিযোগও আসে, যা তিনি ব্যাখ্যা করেছেন।

নিরাপত্তাজনিত কারণে অন্য কারো মালিকানাধীন বাড়িতে থাকার প্রসঙ্গ নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়েছেন টিউলিপ। তবে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীদের নীতিগত আচরণবিধি পর্যালোচনার স্বাধীন উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস তার আর্থিক বিষয়াদি খতিয়ে দেখে অভিযোগ থেকে তাকে মুক্তি দেন।

টিউলিপ অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের ক্ষমতা পরিবর্তনের পর ‘নোংরা রাজনীতি’ তার ওপর চালানো হচ্ছে। তার কথায়, ‘এটি মুহাম্মদ ইউনূস ও আমার খালা শেখ হাসিনার মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের ফলাফল, আর আমি এর বলি হয়েছি। বাংলাদেশে যারা অপরাধ করেছে, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত, কিন্তু আমি তাদের মধ্যে নই।’

কেএন/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ট্রাফিক সার্জেন্টকে গালিগালাজের অভিযোগে সহকারী কর কমিশনার বরখাস্ত Aug 10, 2025
img
‘বাড়িতে বইসা খাওয়ার জায়গা নাই, তোরা বিমানে যাইস ফাইভস্টারে থাকস’ Aug 10, 2025
img
দলের সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছেন আমেরিকান প্রবাসী ফুটবলার জায়ান আহমেদ Aug 10, 2025
img
২৬ বছর পর আবারও প্রেক্ষাগৃহে ফিরছে থাম্মুদু! Aug 10, 2025
img
মৎস্য-প্রাণিসম্পদ ব্যাংক তৈরি করা হবে: মৎস্য উপদেষ্টা Aug 10, 2025
'কাউকে ভোট দিবো না, এই সরকার ৫ বছর থাকুক' Aug 10, 2025
রাজকাহিনী’ নিয়ে আবীরের স্পষ্ট মত এবং সৃজিতের প্রতিক্রিয়া Aug 10, 2025
সুস্মিতা ও ললিত মোদীর সম্পর্ক নিয়ে চরম বিতর্ক, কেন ‘গোল্ড ডিগার’ বলা হয়? Aug 10, 2025
পরমব্রত-পিয়ার ছেলের ছবি অবশেষে ভক্তদের সামনে Aug 10, 2025
ছেলের জন্মদিনে পরীর আবেগঘন পোস্ট, নীরব রাজ Aug 10, 2025
img
বেড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ Aug 10, 2025
টি-টোয়েন্টিতে সেরা স্পিনার নিয়ে রশিদের র‍্যাপিড ফায়ার রাউন্ড মন্তব্য Aug 10, 2025
img
স্বাস্থ্যের সাবেক দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর Aug 10, 2025
ক্রিকেট বিশ্বে আলোড়ন ফেলে দিলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি Aug 10, 2025
কোহলির ওয়ানডে অবসরের প্রস্তুতি শুরু Aug 10, 2025
ফরজ নামাজের পর নবীজি যে আমল করতেন Aug 10, 2025
img
ডিসেম্বরের মধ্যেই এনসিটিসহ ৩ টার্মিনাল বিদেশি অপারেটরদের হাতে হস্তান্তর করা হবে: বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান Aug 10, 2025
img
হেঁটে বেড়াচ্ছেন ইরানের মৃত পরমাণু বিজ্ঞানীরা! Aug 10, 2025
img
নেতাকর্মীদের প্রতি জরুরি নির্দেশনা ছাত্রদলের Aug 10, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রকে ৭৫ ভাগ বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা Aug 10, 2025