আগামী ১২ ও ১৩ আগস্ট বাংলাদেশের আকাশে দেখা যাবে বহুল প্রতীক্ষিত পারসেইড উল্কা বৃষ্টি (Perseid Meteor Shower)। প্রতিবছরের মতো এবারও এই মহাজাগতিক দৃশ্য উত্তর গোলার্ধসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকেও দেখা সম্ভব হবে।
লাইভ সায়েন্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছর ঘটনাটি ঘটছে পূর্ণিমার পরপরই, ফলে চাঁদের উজ্জ্বল আলো অপেক্ষাকৃত ম্লান উল্কাগুলোকে আড়াল করবে। তবুও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আশাবাদী যে উজ্জ্বল উল্কাগুলো খালি চোখেই দেখা সম্ভব হবে।
পারসেইড উল্কা বৃষ্টি ঘটে যখন পৃথিবী সুইফট-টাটল ধূমকেতুর রেখে যাওয়া ধুলিকণা ও ক্ষুদ্র শিলাখণ্ডের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে। প্রায় ২৬ কিলোমিটার ব্যাসের এই বিশাল ধূমকেতু প্রতি ১৩৩ বছরে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে এর কক্ষপথে থাকা ধুলিকণা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে জ্বলে ওঠে, যাকে অনেকেই শুটিং স্টার বা খসে পড়া তারা বলেন।
নাসার তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের পারসেইড উল্কা বৃষ্টির পিক টাইম হবে বাংলাদেশ সময় ১২ আগস্ট রাত থেকে ১৩ আগস্ট ভোর পর্যন্ত। সেরা সময় রাত ১টা থেকে ভোর ৪টা—যখন আকাশ তুলনামূলক অন্ধকার থাকবে এবং উল্কাগুলো স্পষ্ট দেখা যাবে।
পারসেইড উল্কা বৃষ্টির উল্লেখ প্রাচীন চীনের খ্রিস্টপূর্ব ৩৬ সালের রেকর্ডে পাওয়া যায়। মধ্যযুগীয় ইউরোপে একে বলা হতো “টিয়ার্স অব সেন্ট লরেন্স” কারণ এটি সেন্ট লরেন্স শহীদ দিবসের সময়ের কাছাকাছি ঘটত। বিজ্ঞানীরা এখনও এর গঠন ও ধূমকেতুর গতিবিধি নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন।
পারসেইড ছাড়াও এ বছর আরও কয়েকটি উল্কা বৃষ্টি দেখা যাবে—অক্টোবরের শুরুতে ড্রাকোনিডস, অক্টোবরের শেষ দিকে ওরিওনিডস এবং ডিসেম্বরের মাঝামাঝি জেমিনিডস, যা উল্কার সংখ্যা ও উজ্জ্বলতার জন্য বিখ্যাত।
১২ ও ১৩ আগস্টের এই রাত শুধু একটি জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনা নয়, বরং আকাশপ্রেমীদের জন্য এক উন্মুক্ত প্রদর্শনী। শহরের আলোক দূষণ এড়িয়ে খোলা আকাশের নিচে গেলে চোখের সামনে দিয়ে ছুটে যাবে একের পর এক আলোর ধারা—যেন নক্ষত্ররা পৃথিবীকে শুভেচ্ছা জানাতে নেমে এসেছে।
ইউটি/টিএ