কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের সংঘাতের রেশ ক্রিকেটের ২২ গজেও ছড়িয়েছিল। সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আইপিএল ও পিএসএল। সেই ধারাবাহিকতায় ‘ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লেজেন্ডস’-এ পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচ থেকে নাম সরিয়ে নেয় ভারতীয় সাবেক তারকারা।
দেশটির সাবেক ক্রিকেটারদের দাবি ছিল, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচ বয়কটের। এমন উত্তেজনায় অনেকটা অনিশ্চয়তায় ছিল এশিয়া কাপের ভাগ্য। তবে গুঞ্জনকে মিথ্যা প্রমাণ করে আসন্ন এশিয়া কাপেই হাই-ভোল্টেজ লড়াইয়ে নামছে দুই দল। অন্তত টুর্নামেন্টের সূচি তেমনটাই বলছে।
এশিয়া কাপে ভারতীয় টিমকে খেলার অনুমোদন দিয়েছে বিসিসিআই। পাকিস্তানের সঙ্গে এশিয়া কাপের ম্যাচ নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসে উঠলেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার হরভজন সিং। ভারত এবং পাকিস্তান এশিয়া কাপে তিনবার একে অপরের বিপক্ষে খেলতে পারে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচটি ১৪ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া দুই দলের সুপার ফোর এবং ফাইনালেও মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের খেলার বিষয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার সাথে কথা বলতে গিয়ে সাবেক স্পিনার হরভজন সিং বলেন, ‘তাদের বুঝতে হবে, কোনটা গুরুত্বপূর্ণ ও কোনটা গুরুত্বপূর্ণ না। আমার কাছে ব্যাপারটা এমনই। যেসব সৈন্য সীমান্তে আছেন, পরিবারের সঙ্গে দেখা হয় না সেভাবে, কখনো কখনো নিজেদের জীবন উৎসর্গ করছেন এবং আর কখনোই বাড়ি ফেরেন না, তাদের ত্যাগ আমাদের সবার জন্যই অনেক বড় ব্যাপার। সে তুলনায় একটি ক্রিকেট ম্যাচ ছাড়াটা খুবই সামান্য বিষয়।’
হরভজন আরও বলেন, 'আমাদের সরকারের একই অবস্থান, 'খুন অউর পানি এক সাথ নাহি বেহ সক্তে।' (রক্ত আর ঘাম একসাথে বইতে পারে না)। সীমান্তে লড়াই, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা, আর আমরা ক্রিকেট খেলতে যাই, এমনটা হতে পারে না। যতক্ষণ না এই বড় সমস্যাগুলোর সমাধান হয়, ক্রিকেট খুবই ছোট বিষয়। দেশ সর্বদা সবার আগে আসে।' তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘আমাদের যা কিছু পরিচয়, সবই এই দেশের জন্য। সেটা আপনি খেলোয়াড়, অভিনেতা কিংবা যাই হোন কেউ জাতির চেয়ে বড় নয়। সবার আগে দেশ এবং যে দায়িত্ব আসে, সেটা পালন করতেই হবে। দেশের বিষয়ে ক্রিকেট ম্যাচ না খেলাটা খুবই সামান্য ব্যাপার।’
পাকিস্তানের সমালোচনাও করেন হরভজন, ‘আমরা কেন তাদের এত গুরুত্ব দিই? তারা কি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ? এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে সংবাদের সব চ্যানেলেই তাদের দেখাবে? যখন তাদের বর্জন করবেন, কথা বলতে চাইবেন না, তাহলে (মিডিয়ায়) দেখানোর কী প্রয়োজন? এটা গণমাধ্যমের দায়িত্ব। তাদের আগুন উসকে দেওয়া উচিত নয়।’
আরও বলেন, ‘যেটা বলেছি, পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের সঙ্গে (ভারতের) ক্রিকেটারদের হাত মেলানো অনুচিত। মিডিয়াতেও তাদের দেখানো এবং প্রতিক্রিয়া প্রচার করা উচিত নয়। দেশে বসে তারা যা খুশি বলতে পারে, কিন্তু তাদের তুলে ধরাটা উচিত নয় আমাদের জন্য।’
পিএ/এসএন