ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে সফর শুরু করেছিল পাকিস্তান। এরপর ওয়ানডের শুরুটাও হয় জয় দিয়ে। কিন্তু শেষ দুই ওয়ানডেতে হেরে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতল স্বাগতিক ক্যারিবীয়রা। যা পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৪ বছর পর তাদের ওয়ানডে সিরিজ জয়। তবে মাত্র ৯২ রানে অলআউট হয়ে পাকিস্তানের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে। ২০২ রানে তাদের হারের পর রীতিমতো পাক ক্রিকেট দলকে ধুয়ে দিচ্ছেন সাবেকরা।
ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬ উইকেটে ২৯৪ রানের পুঁজি দাঁড় করায়। যাতে বড় অবদান ১৮তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করা উইন্ডিজ অধিনায়ক শাই হোপের (১২০)। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান মাত্র ৯২ রানে গুটিয়ে যায়। সালমান আলি আগা ৩০ রানই তাদের ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। এ ছাড়া পাঁচ ব্যাটার শূন্য এবং মাত্র তিনজন দুই অঙ্কের ঘরে পা রেখেছেন।
বড় ব্যবধানে হেরে সিরিজও হাতছাড়া করেছে মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল। উইন্ডিজদের নায়ক ২৩ বছর বয়সী পেসার জেইডেন সিলস। মাত্র ১৮ রানে তিনি ৬ উইকেট শিকার করেন। এমতাবস্থায় উইন্ডিজ দলে প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্কের মতো বোলার নেই বলে হাফ ছাড়ছেন পাকিস্তানের সাবেক গতিতারকা শোয়েব আখতার, ‘অনেক কৃতজ্ঞ যে সেখানে প্যাট কামিন্স এবং মিচেল স্টার্ক ছিল না। যখনই এমন কন্ডিশনে খেলতে যায়, আমাদের ক্রিকেটারদের বাস্তবতা প্রকাশ হয়ে যায়।’
হারের জন্য পাকিস্তানের কোচ মাইক হেসনকেও দায় দিয়েছেন রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস, ‘মাইক হেসন ভালো টি-টোয়েন্টি কোচ, কিন্তু আমি জানি না ওয়ানডের জন্য তিনি কী গুণাগুণ যোগ করেছেন। এই ফরম্যাটে দক্ষ ক্রিকেটার না খেলালে এমন ঘটনাই ঘটবে। যদি আপনি প্রতিষ্ঠিত অলরাউন্ডার, ব্যাটার, বোলার ও স্পিনারের সমন্বয় করতে না পারেন, পুরো ৫০ ওভারের চাপ সামলানো সম্ভব নয়। ফরম্যাটটিতে আপনি নিজের বিপদ এড়াতে পারবেন না।’
বর্তমান পাকিস্তান দলে আব্দুল রাজ্জাক, আজহার মাহমুদ, মোহাম্মদ হাফিজ ও শহীদ আফ্রিদির মতো অলরাউন্ডারের ঘাটতি দেখছেন আরেক সাবেক তারকা ওমর গুল। তিনি বলেন, ‘আমাদের অতীতের দলের সঙ্গে বর্তমান দলের অনেক পার্থক্য।
আগে আমাদের অলরাউন্ডাররা ছিল অনেক প্রতিষ্ঠিত, যে কারণে আমরা দাপট দেখিয়েছিল। প্রতিটি বিভাগে অলরাউন্ডাররা রাজ করত। এখন আমাদের ব্যাটারদের ব্যাটে আগুন নেই এবং বোলররাও (উপযুক্ত সময়ে) উইকেট নিতে পারে না। গত দুই ম্যাচেই অলরাউন্ডারদের যথাযথ ব্যবহার করেননি অধিনায়ক (রিজওয়ান), এটাও হারের অন্যতম কারণ!’
আরেক সাবেক পেসার তানভির আহমেদ হারের পেছনে কোচ এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে কম ম্যাচ খেলাকে দায় দিয়ে বলেন, ‘তৃতীয় ম্যাচে হারের জন্য মাইক হেসনকে দায়ী মনে করি। সাইম আইয়ুব ও সালমান আলি আগা (তৃতীয় ম্যাচে বোলিংই করেননি) মাঝে ৭ ওভারে ৬৬ রান দেন, যখন ২ রানও কঠিন মনে হচ্ছিল। উইন্ডিজদের ১৮১ রানে থাকাকালেও আমরা জয় পাওয়ার মতো অবস্থানে ছিলাম। কেবল খেলোয়াড়দের দায় দেবেন না, কোচিং স্টাফ এরজন্য দায়ী, তারা বড় অঙ্কের বেতন পাচ্ছেন, তারাই উত্তর দিক। এ ছাড়া এর আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক খেলত বিধায় খেলোয়াড়দের মাইন্ডসেট শক্ত ছিল, যা এখন দেখা যায় না।’
এফপি/এসএন