গণমাধ্যমে লুকিয়ে থাকা গণহত্যার সহযোগীদের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করুন

দেশের গণমাধ্যমগুলোতে লুকিয়ে থাকা চব্বিশের গণহত্যার সহযোগীদের দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছে জুলাই রেভল্যুশনারি জার্নালিস্ট অ্যালায়েন্স- জেআরজেএ নামের একটি সংগঠন।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সংগঠনটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ১৪০০-এর বেশি ছাত্র-জনতাকে নির্মমভাবে হত্যা করে শেখ হাসিনার সরকার। ২০০৮ সাল থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত একাধিকবার দেশে গণহত্যা পরিচালনা করে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগীরা। শেখ হাসিনার সব প্রকার হত্যা, গণহত্যা, গুম থেকে শুরু করে সব অপকর্মের বৈধতা দিয়েছিল বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যম, সাংবাদিক এবং বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের সদস্যরা। ঢাকাসহ সারাদেশের শতশত কথিত সাংবাদিকরা পেশাদারিত্ব ভুলে সরাসরি শেখ হাসিনার অবৈধ কাজে সহযোগিতা করেছিল। তারা জঙ্গি ও রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করাতে ভিন্ন বয়ান তৈরি করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছিল। দফায় দফায় তারা গণভবনে গিয়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে ছাত্রজনতার আন্দোলনকে দমন করার পরিকল্পনায় সহযোগিতা করেছিল এবং তারা হত্যাকাণ্ডের বৈধতা দিয়ে এসেছিল।

এটুকু করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি। তারা বিভিন্ন সময়ে প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের নাম দিয়ে জুলাই বিপ্লবের নায়কদেরকে বিতর্কিত করতে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়। যা পরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিতও হয়েছে।

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এসব দোসরদের নামে মামলা হয় আদালতসহ বিভিন্ন থানায়। এসব মামলা ও অভিযোগের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় কথিত সাংবাদিকতার লেবাসে ফ্যাসিবাদের দোসরা এখনো আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। বর্তমান সময়ে এসেও তারা গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে খুনি হাসিনার গণহত্যাকে বৈধতা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটি ধারণ করা পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন জুলাই রেভল্যুশনারি জার্নালিস্ট অ্যালায়েন্স- জেআরজেএ’র পক্ষ থেকে একাধিকবার মামলায় অভিযুক্ত শেখ হাসিনার সহযোগী সাংবাদিকতার লেবাসে আড়ালে থাকা এসব দোসরদের বিষয়ে দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানালেও এখন পর্যন্ত কোনো মামলারই দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।

জেআরজেএ-এর পক্ষ থেকে অবিলম্বে শেখ হাসিনার সন অপকর্মের সহযোগী এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে প্রশাসনকে বিভিন্নভাবে উসকানি দেওয়া কথিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে।

জেআরজেএ মনে করে, যারা প্রকৃত দোষী তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা না হলে যে কোনো সময় তারা দেশে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পারে। তাই অনতিবিলম্বে সাংবাদিকদের নামে যত মামলা রয়েছে তা বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।

একই সঙ্গে বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দৈনিক আজকের পত্রিকায় মাজহারুল ইসলাম বাবলা নামে একজন লেখকের কলাম জেআরজেএ-এর দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তিনি কলামে লেখেন ‘চব্বিশের ৫ আগস্ট সরকার প্রধানকে সেনাবাহিনী দেশ ত্যাগে বাধ্য করে’। অথচ দেশ এবং সারা বিশ্ব জানে সেদিন সেনাবাহিনী বা কোনো সংস্থা শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগে বাধ্য করেনি, বরং ছাত্রজনতার ক্ষোভের মুখে ভারতের ইচ্ছায় ঢাকা থেকে পালিয়ে যায় স্বৈরাচার হাসিনা।

একই কলামে লেখক লেখেন, ‘মেটিকুলাস ডিজাইনে’ হাসিনার পতন ঘটানো হয়েছে। (যদিও লেখাটি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে, অনলাইন ও ই-পেপার থেকে তা সরিয়ে নেওয়া হয়)। জুলাই রেভল্যুশনারি জার্নালিস্ট অ্যালায়েন্স-জেআরজেএ মনে করে এটি চরম মিথ্যাচার এবং গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট বিরোধী লেখা।

জেআরজেএ সংবাদপত্র, নি:সংকোচে মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে স্বাধীনতার নামে গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে সাংবাদিক নামক কথিত দোসরেরা গণঅভ্যুত্থানকে নানাভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই প্রকৃত দোষীদের বিচার না হলে গণমাধ্যমে লুকিয়ে থাকা ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরেরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবে। ফলে দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে এবং দেশের গণমাধ্যমের প্রতি মানুষের আস্থা আবার হারিয়ে যাবে।

জেআরজেএ অবিলম্বে গণমাধ্যমে লুকিয়ে থাকা ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর যারা জুলাই বিপ্লবকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় তাদের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে। 

এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
কাশ্মীরে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬০, নিখোঁজ ২০০ Aug 15, 2025
img
গির্জায় ঘনিষ্ঠ দৃশ্যকে ঘিরে সিদ্ধার্থ-জাহ্নবীকে খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর আইনি নোটিশ Aug 15, 2025
img
সাদা পাথরের ছবি পোস্ট করে নাজনীন নীহার আক্ষেপ প্রকাশ Aug 15, 2025
img
শেখ মুজিবের মৃত্যুর ৫০ বছর, শোক জানিয়ে যা বললেন তারকারা Aug 15, 2025
ট্রাম্পের নরওয়ে ফোনালাপে নোবেল চাওয়ার তথ্য প্রকাশ Aug 15, 2025
img
জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উচ্চপদস্থ তদন্ত বোর্ড গঠন Aug 15, 2025
img
খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিনে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা Aug 15, 2025
img
বিপাশাকে নিয়ে কটু মন্তব্যের পর ম্রুণালের ক্ষমা প্রার্থনা, ভুল স্বীকারে প্রশংসা হিনার Aug 15, 2025
img
নিজে নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছে নেই, জানালেন ড. ইউনূস Aug 15, 2025
img
স্বাধীনতার পর থেকে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলে পরিণত হতে পারেনি: এ্যানি Aug 15, 2025
সাকিবের ফিরতি ম্যাচে হতাশাজনক পারফরম্যান্স! Aug 15, 2025
img
ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, কোনো শক্তি বিলম্বিত করতে পারবে না: প্রেস সচিব Aug 15, 2025
img
অস্ট্রেলিয়ায় লাল বলের ম্যাচে স্পটলাইটে থাকবেন যারা Aug 15, 2025
img
শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালনকে কেন্দ্র করে আটক ৬ Aug 15, 2025
img
ঐতিহাসিক আলাস্কায় ইউক্রেন ইস্যুতে ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠক Aug 15, 2025
img
সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করলে ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনবে: রিজভী Aug 15, 2025
img
খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া চাইলেন এনসিপি নেতা আবদুল হান্নান মাসউদ Aug 15, 2025
img
লিভারপুল-বোর্নমাউথ ম্যাচ দিয়ে শুরু প্রিমিয়ার লিগ মৌসুম Aug 15, 2025
img
ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ‘ভাইরাল’ সিদ্দিককে গণপিটুনি Aug 15, 2025
img
খালেদা জিয়াকে নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার হওয়া উচিত: আব্বাস Aug 15, 2025