মানুষ বিরক্ত ও নিরুপায় হয়ে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যায়: আসিফ নজরুল

বাংলাদেশের মানুষ বিরক্ত ও নিরুপায় হয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যায় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর শহীদ আবু সাইদ ইন্টারন্যাশনাল কনভনেশন সেন্টারে বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

এসময় তিনি প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের উদ্দেশে করে বলেন, আপনাদের মতে চিকিৎসা খাতে ৪-৫ বিলিয়ন ডলারের একটা বাজার আছে। এই বাজার আপনারা নিতে পারেন না? কেন মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে চায়?

তিনি বলেন, ভারত, ব্যাংককে এমন মানুষও চিকিৎসা নিতে যায়, যারা কখনও ঢাকায় আসেনি। তারা বিরক্ত ও নিরুপায় হয়ে যায়। তাদের যাওয়া বন্ধ করেন। এখানে সেবা দিলে মানুষ কখনোই বিদেশ যাবে না। যাওয়ার কোনো কারণই নাই। এই বাজার দখল করলে আপনাদের লাভ, দেশেরও লাভ। আসিফ নজরুল তার বক্তব্যে চিকিৎসকদের অপ্রয়োজনীয় টেস্ট দেওয়ার প্রবণতার তীব্র সমালোচনা করেন। 

তিনি একটি উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমার বাসার একজন হেল্পিং হ্যান্ড, একজন গরিব ছেলেকে, ঢাকার একটি হাসপাতালে ১৪টি টেস্ট দেওয়া হয়েছিল। সে রাগ করে গ্রামে চলে যায় এবং সেখানে টেস্ট ছাড়াই সুস্থ হয়ে ফিরে আসে। গরিব রোগীদের অনর্থক ১৪-১৫টা টেস্ট দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ করা দরকার।

আইন উপদেষ্টা নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ কেনার জন্য রোগীদের বাধ্য করার প্রবণতা নিয়ে বলেন, পৃথিবীর আর কোথাও কি এমন হয় যে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের জন্য চিকিৎসকদের নির্দিষ্ট সময় থাকে? দেশের বড় বড় হাসপাতালের ডাক্তাররা কি ওষুধ কোম্পানির দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগী?

আসিফ নজরুল বলেন, আরেকটা অভিযোগ প্রায় সময়ই পাওয়া যায়, সেটা হলো- টেস্টের রেজাল্ট ভুল। অনেক জায়গায় অনেক ভালো রেজাল্ট হয়, আমি খারাপ জায়গার কথা বলছি। হাসপাতালের কর্মীদের প্রতি খারাপ ব্যবহার এবং তাদের কম বেতনের বিষয়ে সরকারের এ উপদেষ্টা বলেন, নার্সরা যদি ১২ হাজার টাকা বেতন পায়, তাহলে তারা কীভাবে ভালো সেবা দেবে? তারা তো বিরক্ত হয়েই থাকবে।অনেক হাসপাতালের মালিক আছেন, যাদেরকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। আপনারা কোটি টাকার বাগানবাড়ির মালিক হতে পারেন কিন্তু নার্সদের ভালো বেতন দিতে পারেন না?

উপদেষ্টা বলেন, মানুষ এখন ভারত বা থাইল্যান্ড যেতে চায় না। করোনাকালে প্রমাণ করেছেন আপনাদের চিকিৎসার সক্ষমতা আছে। কর্মীদের বেতন যদি একটু বাড়িয়ে দেন তাহলে কত আর ক্ষতি হবে? যদি ১০০ কোটি টাকা লাভ করেন, তাহলে ১০ শতাংশ কম লাভ হবে? এখানে সামান্য লাভ কম হলেও উন্নত সেবার মাধ্যমে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব।

ইউটি/টিএ


Share this news on:

সর্বশেষ

img
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার সক্ষমতা সরকারের নেই : জিল্লুর রহমান Aug 17, 2025
img
বাহুবলীর শিবগামী এবার আল্লু অর্জুনের নতুন মহাযজ্ঞে Aug 17, 2025
img
প্রথম ম্যাচে ভিন্ন অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলো প্রিমিয়ার লিগে উত্তীর্ণ দুই ক্লাব Aug 17, 2025
img
বঙ্গবন্ধুর বাড়ি যারা ভেঙেছে, মনে রাখবেন তাদেরও বাড়িঘর রয়েছে : বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী Aug 17, 2025
img
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের জামিন শুনানি অক্টোবরে Aug 17, 2025
img
লাল শাড়ি আর সবুজ চুড়িতে প্রিয়ার বাঙালি রূপে ঝড় Aug 17, 2025
img
ফাঁস হলো আসল সত্য, আইপিএলের মাঝেই ধারাভাষ্যকে সরাতে চেয়েছিলেন হার্দিক! Aug 17, 2025
img
বলিউডের প্রথম ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তারকা শাম্মি কাপুর, বানিয়েছিলেন নিজের ওয়েবসাইটও Aug 17, 2025
img
অসুস্থতায় রিংকু, দোয়া চাইছেন ভক্তরা Aug 17, 2025
img
রাশিয়া বিশাল এক শক্তি, ইউক্রেনের উচিত সমঝোতা করা: ট্রাম্প Aug 17, 2025
img
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যে শর্ত দিলেন পুতিন Aug 17, 2025
img
ম্যাচসেরা ইনিংস খেলে জিসানের বার্তা Aug 17, 2025
img
ককপিটের দরজা খোলা রেখে ফ্লাইট পরিচালনায় ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের পাইলট বরখাস্ত Aug 17, 2025
img
জি কে শামীমের খালাসের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ Aug 17, 2025
img
দল জিতলেও আবারও ব্যাট-বলে ব্যর্থ সাকিব Aug 17, 2025
img
হিন্দি সিরিজে নতুন চ্যালেঞ্জে সন্দীপ্তা সেন Aug 17, 2025
img
বার্সেলোনার জয়েও সন্তুষ্ট নন হ্যান্সি ফ্লিক Aug 17, 2025
img
চট্টগ্রাম বন্দরের শ্রমিক ও কর্মচারীরা পাচ্ছেন বিশেষ উৎসাহ বোনাস Aug 17, 2025
img
ইপিএলের হাইভোল্টেজ ম্যাচে আজ মুখোমুখি ম্যানইউ-আর্সেনাল Aug 17, 2025
img
পাকিস্তানে বন্যায় দুই দিনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫১ Aug 17, 2025