অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে যুবলীগের সাবেক নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ও তার স্ত্রী জেসমিন আক্তারের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলায় বাবরের বিরুদ্ধে ৮৮ লাখ ৮৭ হাজার ৩৬০ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ৩০ লাখ ৮৮ হাজার ৩৯০ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আরেক মামলায় তার স্ত্রী জেসমিন আক্তারের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৮৩ লাখ ৯ হাজার ৮৮০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ১৫ লাখ ৫০ হাজার ৫৮০ টাকা সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বুধবার (২০ আগস্ট) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নওশাদ আলী মামলা দুটি করেছেন বলে চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ জানিয়েছেন। দুদক কর্মকর্তারা জানান, হেলাল আকবর ও তার স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে সম্পদ বিবরণী জমা দিতে ২০২২ সালে নোটিশ দেয় দুদক। দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে হেলাল আকবর ৩০ লাখ ৮৮ হাজার ৩৯০ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং নিজ নামে ৮৮ লাখ ৮৭ হাজার ৩৬০ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) এবং ২৭ (১) ধারায় মামলা করা হয়েছে।
অপরদিকে জেসমিন আক্তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের সময় ২ কোটি ১০ লাখ ১৮ হাজার ৪২০ টাকা স্থাবর এবং ২৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য দিয়েছিলেন।
সম্পদ বিবরণী অনুযায়ী- তার মোট সম্পদ ২ কোটি ৩৪ লাখ ৭৮ হাজার ৪২০ টাকা। তবে দুদক সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে জেসমিনের মোট সম্পদ পেয়েছে ২ কোটি ৫০ লাখ ২৯ হাজার টাকার। অর্থাৎ তিনি ১৫ লাখ ৫০ হাজার ৫৮০ টাকা সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেছেন।
জেসমিন আক্তারের আয়কর নথিতে দেখা যায়, তিনি মোট ২ কোটি ৬৬ লাখ ৫০০ টাকা আয় করেছেন। তবে দুদক গ্রহণযোগ্য আয় পেয়েছে মাত্র ৮৬ লাখ ৪৫ হাজার ১২০ টাকা। সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় জেসমিনের নামে ২ কোটি ৫০ লাখ ২৯ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। তার পারিবারিক ব্যয়সহ মোট সম্পদ ২ কোটি ৬৯ লাখ ৫৫ হাজার টাকার। অর্থাৎ ১ কোটি ৮৩ লাখ ৯ হাজার ৮৮০ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন তিনি। সেই হিসাবে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদসহ জেসমিন আক্তারের মোট অবৈধ সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৯৮ লাখ ৬০ হাজার ৪৬০ টাকা।
মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে, জেসমিন আক্তার একজন গৃহিণী। তার নামে অর্জিত সব সম্পদ তার স্বামীর টাকায় করা। তার স্বামী হেলাল আকবরকে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহায়তা করে দণ্ডবিধির ধারা ১০৯ এ শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। ১ কোটি ৯৮ লাখ ৬০ হাজার ৪৬০ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করায় এবং তার স্বামী অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহায়তা করার অপরাধে দুজনের বিরুদ্ধে দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারায় এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।