জাতীয় দলের জন্য বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলারদের ছাড়তে অনুরোধ করেছিল বাফুফে। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে আজ বসুন্ধরা কিংসের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎ কুমার ভৌমিক বাফুফে সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দিয়েছেন। সেই চিঠিতে কিংস তাদের উপর অভিযোগ খন্ডনের পাশাপাশি ফেডারেশনের বেতনভুক্ত স্টাফ ও জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন।
ইংরেজীতে লেখা তিন পাতার লম্বা চিঠির প্রথম দুই পাতায় কিংস ফিফার আইন, গত কয়েক বছর খেলোয়াড় ছাড়ার ঘটনা সহ নানা কিছু তুলে ধরেছে। তৃতীয় পাতায় উপসংহারে একেবারে শেষ অংশে জানিয়েছে, বাংলাদেশের ফুটবল আইকন হামজা চৌধুরি লেস্টার সিটি থেকে ফিফা আইন অনুযায়ী ৩১ আগস্ট থেকে জাতীয় দলের জন্য বিবেচিত হবেন। তদ্রুপ বসুন্ধরা কিংসও ৩১ আগস্ট সেপ্টেম্বর ফিফা উইন্ডোর জন্য খেলোয়াড় ছাড়বে।
ফিফার আইন অনুযায়ী ফিফা উইন্ডোতে ৭২ ঘন্টা আগে খেলোয়াড় ছাড়তে বাধ্য নয়। বসুন্ধরা কিংস-বাফুফের সঙ্গে এবার খেলোয়াড় ইস্যুতে দূরত্ব বা জটিলতার জন্য ফেডারেশনের পেশাদার স্টাফদের দায়ী করেছে কিংস। তাদের দৃষ্টিতে, পেশাদার স্টাফরা ফিফার আইন-রেগুলেশন্স নির্বাহী কমিটিকে উপস্থাপন করেনি ফলে ক্লাব-ফেডারেশন ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে।
ফেডারেশনের স্টাফ ছাড়াও কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবেরার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কিংস। চিঠির উপসংহার অংশে তারা লিখেছে, জাতীয় দলের হেড কোচ ফিফা প্রতি উইন্ডোতেই ১৫-২০ দিন অনুশীলন করতে চায়। জাতীয় দলে এত সময় নিয়ে অনুশীলনের জন্য কোচিং প্যানেলের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কিংস। পাশাপাশি এটা ক্লাবের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করে তারা।
বাফুফে তাদের চিঠিতে গত ছয় বছরে বসুন্ধরা কিংস কোন কোন টুর্নামেন্টে খেলোয়াড় ছাড়েনি কিংবা পরবর্তীতে ছেড়েছে সেটার তালিকা দিয়েছিল। বসুন্ধরা কিংস চিঠির দ্বিতীয় পাতায় ছক আকারে সেটার উত্তর দিয়েছে। তারা দেখিয়েছে উক্ত প্রতিযোগিতার প্রায় সবই ফিফা উইন্ডোর বাইরে। তারা অনেক ক্ষেত্রে খেলোয়াড় ছেড়েছে যদিও তারা বাধ্য নয় আবার কখনো নিজেদের অন্য প্রতিযোগিতা থাকায় খেলোয়াড় ছাড়েনি।
ফিফার আইন ও নানা যুক্তি তুলে ধরেছেন বসুন্ধরা কিংসের সাধারণ সম্পাদক। তবে ক্লাবটির সভাপতি ইমরুল হাসানের সমালোচনা বা দায়মুক্তির কোনো সুযোগ নেই। কারণ তিনি বাফুফের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তি সিনিয়র সহ-সভাপতি। জাতীয় দল কমিটিরও ডেপুটি চেয়ারম্যান। ৩০ জুলাই বাফুফের একটি চিঠি যেখানে ১৩ আগস্ট ক্যাম্প শুরু হওয়ার কথা সুস্পষ্টভাবে লিখিত সেখানে তিনি স্বাক্ষর করেছেন। এই বিষয়ে অবহিত হওয়ার পরও তার ক্লাবেরই ১০ জন খেলোয়াড় না ছেড়ে যেমন উদ্ভুত পরিস্থিতি সৃষ্টির দায় এড়াতে পারেন না, তেমনি তিনি ক্লাবে প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতি নেবেন সেটা জাতীয় দল কমিটি বা ফেডারেশনকে অবহিত করলেও এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় না বলে মত ফুটবলসংশ্লিষ্টদের।
২০১৮ সাল থেকে কিংস প্রিমিয়ার লিগ খেলছে। ২০২০ সাল থেকে বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান ফেডারেশনের সহ-সভাপতি পদে। ২০২০-২৪ এই মেয়াদে একাধিকবার কিংস খেলোয়াড় না ছাড়ার জন্য খবরের শিরোনাম হয়েছে। ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি হওয়ার পরও কিংস-ফেডারেশনের খেলোয়াড় ইস্যুর দূরত্ব-সমন্বয়হীনতা আরো বড় হয়েছে।
এফপি/টিএ