মার্কিন করিডোরকে ইরানের বুড়ো আঙুল

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় আজারবাইজান-আর্মেনিয়া শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে প্রস্তাবিত করিডোর নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। খবর প্রকাশ হতেই কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান।

তেহরান সাফ জানিয়ে দিয়েছে ইরানের এত কাছে মার্কিন উপস্থিতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। তাদের মতে, এই করিডর বাস্তবায়ন হলে তা হবে মার্কিন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি কৌশল, যা ইরান কখনোই বরদাস্ত করবে না। এমনকি ইরান বলেছে “এটি ট্রাম্প করিডোর হবে না, বরং এটি হবে শত্রু সৈন্যদের কবরস্থান।”

তেহরানের আশঙ্কা, করিডরটি বাস্তবায়িত হলে ইরান ককেশাস অঞ্চলের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। সবচেয়ে বড় ভয় সম্ভাব্য শত্রু বাহিনী ইরানের সীমান্তের একেবারে কাছাকাছি অবস্থান নিতে পারবে।

হুমকি দেওয়ার একদিন পরেই দ্রুত আর্মেনিয়ায় পৌঁছান ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। আর্মেনিয়ার রাজধানীতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান তাকে আশ্বস্ত করেন এই করিডরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে আর্মেনিয়ার হাতেই। পাশিনিয়ান স্পষ্ট করে বলেন, “আমাদের সড়ক আমাদের এখতিয়ারেই থাকবে। কোনো তৃতীয় দেশ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, এখানে নিয়ন্ত্রণ করবে না।” পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, প্রস্তাবিত করিডর কেবল আঞ্চলিক অর্থনৈতিক দিগন্ত উন্মোচনের জন্য কাজ করবে।

প্রস্তাবিত করিডোরটি যাবে আর্মেনিয়ার দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে, যা আজারবাইজানকে নাখিচেভান এক্সক্লেভ হয়ে তুরস্কের সাথে যুক্ত করবে। যুক্তরাষ্ট্র এর উন্নয়ন কাজে যুক্ত থাকার পরিকল্পনা করছে। ফলে অঞ্চলটিতে জ্বালানি ও বাণিজ্য বাড়লেও, সীমান্ত রাজনীতিতে মার্কিন হস্তক্ষেপ বাড়বে বলে আশঙ্কা ইরানের।

এই প্রেক্ষাপটে আর্মেনিয়ার পর প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান যান বেলারুশে। মিনস্কে প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে বৈঠকে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সমালোচনা করেন। দুই নেতা নিজেদের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক জোরদারে একমত হন। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে রাশিয়া যে পশ্চিমা চাপের মুখে রয়েছে, সেই বার্তাও স্পষ্ট করতে চেয়েছে এই বৈঠক।

আঞ্চলিক বিশ্লেষকদের মতে, এই করিডোর নিয়ে ইরানের কঠোর অবস্থান শুধু সীমান্ত নিরাপত্তার কারণে নয়, বরং এটি মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন প্রভাব কমানোর ভূ-রাজনৈতিক কৌশলেরই অংশ। পরিস্থিতি কোনদিকে গড়ায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

এমকে/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
২০১৪ থেকে নিষিদ্ধ ন্যান্সির জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা সমূহ Aug 22, 2025
img
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন নিয়ে নতুন নির্দেশনা Aug 22, 2025
img
ওয়ানডে অভিষেকেই ধারাবাহিক রেকর্ড প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানের Aug 22, 2025
img
কোন বার্তা দিলো 'রক্তবীজ' এর নতুন আইটেম গান? Aug 22, 2025
img
নতুন সিনেমার শুটিংয়ে নামলেন সালমান Aug 22, 2025
img
ভক্তদের কাঁদিয়ে বিদায় নিলেন জনপ্রিয় কমেডিয়ান জসবিন্দর ভাল্লা Aug 22, 2025
img
ভারতে স্বাধীনতা দিবসে লাড্ডু কম পাওয়ায় সরাসরি ফোন মুখ্যমন্ত্রীর হেল্পলাইনে Aug 22, 2025
img
জুলাই সনদ নিয়ে মতামত জমা দিয়েছে এনসিপি Aug 22, 2025
img
আইনসিদ্ধ হোক বা না হোক, বিয়ে তো করেছিলাম : নুসরাত Aug 22, 2025
img
ভাত ও ভোটের অধিকার ফিরে পেতে ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলন করেছিলাম : নুর Aug 22, 2025
বিদেশি পর্যটকদের জন্য থাইল্যান্ডে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট একদম ফ্রি! Aug 22, 2025
img
তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে আলালের মন্তব্য Aug 22, 2025
img
শেখ হাসিনার নীতি ছিল আমার ভোট আমি দেবো তোমার ভোটও আমি দেবো: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান Aug 22, 2025
img
বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক ২৫-২৮ আগস্ট Aug 22, 2025
img
ডাকসু নির্বাচন: শনিবার পর্যন্ত আপিলের সুযোগ Aug 22, 2025
img
নির্বাচন পেছাতেই পিআর পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক: আলাল Aug 22, 2025
img
১৬ কোটি আয়ের পথে ‘ধূমকেতু’ Aug 22, 2025
img
গেন্ডারিয়ায় ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ মেসবাহ মারা গেছেন Aug 22, 2025
img
শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট রানিল বিক্রমসিংহে গ্রেপ্তার Aug 22, 2025
img
দু-সপ্তাহের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যাবে পুতিন-জেলেনস্কির শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা: ট্রাম্প Aug 22, 2025