বৈধ ভিসাধারী ৫ কোটি ৫০ লাখেরও বেশি বিদেশির রেকর্ড খতিয়ে দেখার ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন প্রোসডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। ভিসা বাতিল বা অভিবাসন আইন ভঙ্গের সম্ভাব্য লঙ্ঘন শনাক্ত করাই এর লক্ষ্য। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, দেশটি অবিলম্বে বাণিজ্যিক ট্রাক চালকদের জন্য সব কর্মভিসা প্রদান বন্ধ করবে।
রুবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দাবি করেন, বিদেশি ট্রাক চালকরা ‘আমেরিকানদের জীবন বিপন্ন করছে এবং দেশীয় ট্রাক চালকদের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে লিখিত এক জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, সকল ভিসাধারীই ‘নিরবচ্ছিন্ন যাচাই’ প্রক্রিয়ার আওতায় থাকে।
পররাষ্ট্র দপ্তরের ভাষ্য, ভিসাধারীরা অতিরিক্ত সময় অবস্থান করছেন কি না, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত কি না, জননিরাপত্তার জন্য হুমকি কি না, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত কি না বা সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তা করছে কি না—এসবই মূলত খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায় তবে তাদের ভিসা বাতিল করা হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে।
২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৪ লাখ মানুষকে বহিষ্কারের পথে রয়েছে বলে নিউইয়র্ক টাইমসের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বৈধ অভিবাসী ও অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছেন। সরকার শুরুতে বলেছিল, শুধুমাত্র বিপজ্জনক অপরাধীদের লক্ষ্যবস্তু করা হবে, কিন্তু বাস্তবে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ রেস্তোরাঁ, নির্মাণ সাইট, খামার এবং এমনকি আদালতের ভেতরেও অভিবাসীদের গ্রেপ্তার করছে। মানবিক কারণে প্রদত্ত প্যারোল ও অস্থায়ী সুরক্ষা কর্মসূচিও বাতিলের চেষ্টা চলছে, যা বিভিন্ন দেশের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে থাকা লাখো মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস ও কাজের অধিকার দিয়েছে। শিক্ষার্থী ভিসাধারীরাও এই অভিযানের শিকার হচ্ছেন। পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছরই ৬ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। যদিও দপ্তরটির দাবি, এসব শিক্ষার্থী হয় আইন ভেঙেছেন বা সন্ত্রাসবাদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
বাস্তবে বহু ঘটনায় দেখা গেছে তারা শুধু ফিলিস্তিনপন্থী প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন বা মতামতমূলক নিবন্ধ লিখেছিলেন—যা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানসিদ্ধ বাকস্বাধীনতার অধিকারভুক্ত। এমনকি অনেকে কোনো ধরনের আন্দোলনেও অংশ নেননি, তবু তাদের ভিসা বাতিল হয়েছে।
সূত্র : আলজাজিরা।
ইউটি/টিকে