সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের দক্ষিণে ইসরাইলি ড্রোন হামলায় ছয় সিরীয় সেনা সদস্য নিহত হয়েছে। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আল এখবারিয়া টিভি জানিয়েছে, দামেস্ক থেকে নিন্দা জানানোর এক দিন পরই নতুন করে ইসরাইলি হামলা হলো।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, গত বছরের ডিসেম্বরে ইসলামপন্থি জোটের নেতৃত্বে সিরিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদকে উৎখাতের পর থেকে ইসরাইল সিরিয়ায় শত শত হামলা চালিয়ে আসছে।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার ভোরে আল-কিসওয়া শহরের কাছে দামেস্কের গ্রামাঞ্চলে সিরীয় সেনা অবস্থান লক্ষ্য করে ইসরাইল ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
এর আগে সোমবার সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পার্শ্ববর্তী বেইত জিনে ইসরাইলি সামরিক অনুপ্রবেশের নিন্দা জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইসরাইল ১১টি সামরিক যান ও প্রায় ৬০ জন সৈন্যের একটি বাহিনী মোতায়েন করেছে। তারা হারমন পর্বতের পাদদেশে একটি কৌশলগত পাহাড়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরাইলি আক্রমণকে নিজেদের সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন আখ্যায়িত করে নিন্দাও জানিয়েছে সিরিয়া।
সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শায়বানি অভিযোগ করেছেন, ইসরাইল নিরস্ত্রীকৃত এলাকায় গোয়েন্দা কেন্দ্র ও সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করছে তাদের ‘বিস্তারবাদী ও বিভাজনমূলক পরিকল্পনা’ এগিয়ে নিচ্ছে।
চলতি মাসের শুরুরে এক সাক্ষাৎকারে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, গ্রেটার ইসরাইল প্রতিষ্ঠার ‘ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক মিশন’-এ রয়েছেন তিনি।
গ্রেটার ইসরাইল বলতে ১৯৬৭ সালের জুনের ৬ দিনের যুদ্ধের পর ইসরাইল ও দেশটির সদ্য দখল করা এলাকা- পূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা, সিনাই উপদ্বীপ ও গোলান মালভূমিকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম আই২৪-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু ‘গ্রেটার ইসরাইল’ নিয়ে আরও বলেন, এই পরিকল্পনায় বর্তমান ইসরাইল ভূখণ্ডের সঙ্গে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের জন্য নির্ধারিত এলাকাগুলোও একীভূত করা হবে এবং সম্ভবত বর্তমান জর্ডান ও মিশরের কিছু এলাকাও অন্তর্ভূক্ত থাকবে।
নেতানিয়াহুর ‘গ্রেটার ইসরাইল’ মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিশ্বের ৩১টি দেশ। দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক যৌথ বিবৃতি নেতানিয়াহুর পরিকল্পনাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
সূত্র: আল জাজিরা
পিএ/টিএ