আফগানিস্তানে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কুনার প্রদেশে ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৯০০ জনে পৌঁছেছে। আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজারে। এখনও অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। জীবিত উদ্ধারে জোর অনুসন্ধান চলছে।
স্থানীয় সময় রোববার (৩১ আগস্ট) রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল জালালাবাদ থেকে ২৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে ভূপৃষ্ঠের ৮ কিলোমিটার গভীরে। এরপর আরও অন্তত তিনটি আফটারশক হয়। সেগুলোর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫ থেকে ৫ দশমিক ২-এর মধ্যে।
মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হলেও এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এপির প্রতিবেদন মতে, ভূমিকম্পে কুনার প্রদেশের বেশ কয়েকটি কার্যত গ্রাম মানচিত্র থেকে মুছে গেছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র ইউসুফ হাম্মাদ জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯০০ জনে দাঁড়িয়েছে, আহত আরও ৩ হাজার জন। তিনি বলেন, ‘এখনও আহতদের উদ্ধার তৎপরতা চলছে। তাই এই পরিসংখ্যান উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হতে পারে।’
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ভূমিকম্পের ফলে কিছু এলাকায় ভূমিধসের সৃষ্টি হয়। এতে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে সেগুলো পরে আবার খুলে দেয়া হয়েছে। যেসব এলাকায় পৌঁছানো কঠিন সেখানে পৌঁছানোর জন্য বাকি রাস্তাগুলো আবার উন্মুক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
ভূমিকম্পের পর তিনদিন পরও এখনও অনেকেই নিখোঁজ রয়েছে। উদ্ধার অভিযান চলছে, তবে ধীর গতিতে। রাস্তা ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
দাতব্য সংস্থা ইসলামিক রিলিফ-এর প্রধান ইব্রাহিম আহমেদ আল জাজিরাকে বলেছেন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দলের পৌঁছানো খুবই কঠিন।
তিনি বলেন, দাতব্য সংস্থা কুনার ও নানগারহারে কাজ করছে, তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে পৌঁছানো কঠিন, এবং সংস্থাগুলো ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে খাবার পৌঁছে দেয়ার জন্য স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের উপর নির্ভর করছে।
এই কর্মকর্তা জানান, পাহাড়ি অঞ্চল এবং অবকাঠামোর অভাব উদ্ধারকারী দলগুলোর প্রধান চ্যালেঞ্জ। তার কথায়, ‘এই পরিস্থিতির আগেও কিছু এলাকায় আমরা কেবল পায়ে হেঁটেই পৌঁছাতে পারতাম। বন্যা, সমস্ত গ্রাম ধসে পড়া, ভূমিধসের কারণে আমরা এখন গাড়ি বা অন্য কোনো উপায় ব্যবহার করতে পারছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি এই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এমন কিছু এলাকা আছে যেখানে এখন পর্যন্ত কেউ পৌঁছাতে পারেনি।’ সেসব এলাকায় উদ্ধার অভিযান শুরু হলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন এই কর্মকর্তা।
কেএন/টিকে