মডেল হিসেবে শোবিজে যাত্রা শুরু করেন এডলফ খান। পরবর্তীতে টিভি ও চলচ্চিত্রে স্টাইলিশ ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিছুদিন আগেই একটি পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে, দেশের সেরা সুদর্শন পুরুষের পুরস্কার পেয়েছেন এডলফ। তারপর থেকে নেট দুনিয়ায় তাকে নিয়ে ট্রল করা হয়।
ট্রলের জবাবে এডলফ খান বলেন, আমি একজন শিক্ষিত-সচেতন-স্পষ্টভাষী মানুষ! আমি কখনো কোথাও বলিনি আমি দেশের সবচেয়ে সুদর্শন। তবে হ্যাঁ, আমি আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ মেধাসম্পন্ন একজন। আল্লাহ আমাকে জ্ঞান-বুদ্ধি-ব্যক্তিত্ব, সরলতা, উদারতা, অন্যকে সম্মান ও ভালোবাসা দেয়ার ক্ষমতা দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আমাকে নিয়ে তর্ক-বিতর্ক না করে, মাথা খাটিয়ে ভাবুন, আমি কখনো কোথাও এমন কোনো কথা বলতে পারি কি না!
সেরা সুদর্শন পুরুষ নয়, সেরা স্টাইলিশ ফ্যাশন ডিরেক্টরের পুরস্কার পেয়েছেন এডলফ। তা জানিয়ে তিনি বলেন, কখনো কেউ বলতে পারবেন না, মুখে হাসি ছাড়া আমি কারো সাথে কথা বলেছি। ভালোবাসা না ছড়িয়ে বিদায় নিয়েছি। আপনারা নিশ্চয়ই কম বেশি আমার সাক্ষাতকারের সাথে পরিচিত। আমাকে সেরা স্টাইলিশ ফ্যাশন ডিরেক্টর হিসেবে অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়েছে। কোনো সুন্দর প্রতিযোগিতার সেরা সুদর্শন হিসেবে নয়। আমি বরাবর ব্যতিক্রম, সবার মতো নই। কারো মতো হবো না বলেই শুধু এডলফ খানই হতে চেয়েছি।
এদিকে সম্প্রতি বাবা হারিয়েছেন এডলফ খান। বাবার জানাজাতে গিয়েও রক্ষা পেলেন না তিনি। তার পোষাক নিয়ে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রল করছেন। অনেকেই বলছেন, এই সন্তান জন্ম দেয়ার পরপরই তার বাবার আত্মহত্যা করা উচিৎ ছিলো। তবে বাবাকে হারিয়ে এসব বিষয়ে চোখ না দিয়ে নিজের মতই একা আছেন।
এবার সাইবার বুলিংয়ের শিকার এডলফ খানের পাশে দাঁড়ালেন বাংলাদেশের ‘প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের কূটনীতিক’ ওয়ালিদ ইসলাম। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগে পড়াশোনা শেষ করে প্রথমবার বিসিএসে নন-ক্যাডারে চাকরি পেয়েছিলেন। পরে ৩৫তম বিসিএস দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চাকরিতে ঢোকেন।
এডলফ খানের পক্ষ নিয়ে ওয়ালিদ ইসলাম তার ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে লেখেন, আমি জানি না আমরা আপনাদের সমাজে জন্মগ্রহণ করে কি পাপ করি বা করেছি। আমরা কেবলমাত্র আপনাদের সমাজের হাসির খোরাক। পৃথিবীর জন্য আর কোন উপযোগিতাই বোধহয় আমাদের নেই। এডলফ খান বা তার ভাই অথবা নাহিদ নামের এই ছেলেটা কাকে আপনি তার মেয়েলি আচরণের জন্য দায়ী করবেন? দায় যদি কারও থাকে তা কেবলই সৃষ্টিকর্তার। কারণ, তিনিই শরীরে হরমোনাল ইমব্যালান্স জন্ম থেকেই দিয়ে দিয়েছেন আপনাদের হাসির খোরাক বনে পৃথিবীতে বাচার জন্য। এ্যাডলফ খানের অনেক কর্মকাণ্ডে আমিও বিরক্ত হই। কিন্তু, বাবা মারা যাবার পরেও তার বাবা-মাকে তুলে গালি-গালাজ, এরকম সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য আপনারা নিজেরাই সৃষ্টিকর্তার আসনে বসে তার বাবাকে দোজখে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সরাসরি উল্লেখ করছেন যে, এই সন্তান জন্ম দেয়ার পরপরই তার বাবার আত্মহত্যা করা উচিৎ ছিলো। জন্মের আগে কতোখানি পাপ করলে এধরণের মন্তব্য কাউকে শুনতে হয়!
তিনি আরও লেখেন, নাহিদ ছেলেটা এতোটা এ্যাস্থেটিক রান্না-বান্নার ভিডিও তৈরি করে তা বলার মতো নয়। ছেলেটা একটা ইন্টারভিউ দিলো সেদিন। তার নিচে গণহারে মন্তব্য, এই হিজড়াটা এগুলো বাদ দিয়ে হিজড়া ডেরায় যায় না কেন? ও ছেলে না মেয়ে? ওর এতো ঢং কেন? ছেলেটা ভিডিওতে শুধু রান্নাবান্নার সৌন্দর্য্যই দেখায়। তাতেও আপনাদের সমস্যা!
সবশেষ তিনি লেখেন, ভাই নিজেকে মানুষ ভাবেনতো? আল্লাহ কিন্তু উপরে আছেন। আর আমাদেরকে আপনারা মানুষ ভাবেন না ভাবেন আল্লাহ কিন্তু ভাবেন। আমরাও কষ্ট পাই, আমাদের কান্নাগুলোও তার কাছে পৌছায়। তবুও মন থেকে দোয়া করি আপনার সন্তানকে আল্লাহ যেনো আমাদের কারো মতো না করে দুনিয়াতে পাঠান।
এমকে/এসএন