রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে ‘শিগগিরই’ মুখোমুখী বৈঠক চান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দ।
তবে এ যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী দেশ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান মনে করেন, এখনও যুদ্ধরত দুই দেশের প্রেসিডেন্টের মুখোমুখী বৈঠকের সময় আসেনি।
চীনের তিয়ানজিনে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলন থেকে ফেরার সময় বিমানে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে এক প্রশ্নের উত্তরে নিজের এই ধারণা ব্যক্ত করেন এরদোয়ান। তিনি বলেন, “এসসিও সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে, কথাবার্তাও হয়েছে। আমি সেখানে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছি। তারা দু’জনই আমাকে জানিয়েছেন যে মুখোমুখী বৈঠকের চেয়ে ইস্তাম্বুলে চলমান শান্তি সংলাপকে তারা গুরুত্ব দিতে আগ্রহী।”
কৃষ্ণ সাগরের উপদ্বীপ ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা না করা এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কিয়েভের আবেদনকে ঘিরে কয়েক বছর ধরে টানাপোড়েন চলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। এই টানাপোড়েনের এক পর্যায়ে পুতিনের নির্দেশে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে শুরু হয় রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযান, যা এখনও চলছে।
এরদোয়ান ২০২৩ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধাবসানে এগিয়ে আসেন এরদোয়ান। তিনি পুতিন এবং জেলেনস্কি উভয়েরই মিত্র। এরদোয়ানের প্রস্তাবে এবং উদ্যোগে ২০২৩ সালের আগস্টে প্রথম তুরস্কে শান্তি আলোচনা শুরু করেন রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি প্রতিনিধিরা, কিন্তু প্রায় এক মাস আলোচনা চলার পর তা ভেস্তে যায়।
পরে ২০২৫ সালের এপ্রিলে ফের দুই দেশের মধ্যে শান্তি সংলাপ শুরুর প্রস্তাব দেন এরদোয়ান। তার সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে মে মাস থেকে ফের শান্তি সংলাপ শুরু করেন রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি কর্মকর্তারা।
সেই সংলাপ এখনও চলছে এবং কিছু ইস্যুতে দুই দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে সমঝোতাও হয়েছে। সেই সমঝোতার স্বারক হিসেবে জুন থেকে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার যুদ্ধবন্দি এবং সেনাদের মরদেহ বিনিময় করেছে রাশিয়া-ইউক্রেন।
এদিকে গত ১৫ আগস্ট এই যুদ্ধ ইস্যুতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তারপর ১৮ আগস্ট জেলেনস্কির সঙ্গেও বৈঠক করেন ট্রাম্প। দুই দেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি বলেন, শিগগিরই পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠকের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।
সোমবার ট্রাম্পের এই আশাবাদে কার্যত পানি ঢেলে দিলেন এরদোয়ান।
সূত্র : রয়টার্স
এমকে/এসএন