জুলাই-আগস্ট যোদ্ধাদের হত্যাকারীদের বিচার ছাড়া নির্বাচন না করার দাবি জানিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে ৯ দফা প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐক্যজোট। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় ‘জুলাই সনদের বাস্তবায়ন, নির্বাচন ও কল্যাণ রাষ্ট্র’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে এসব প্রস্তাব ঘোষণা করেন জাতীয় ঐক্যজোটের প্রধান সমন্বয়কারী মাওলানা আলতাফ হোসেন মোল্লা।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে এর আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। এছাড়া ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান কেএম আবু তাহেরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐক্য জোটের ৯ দফা প্রস্তাবগুলো হলো-
১. জুলাই যোদ্ধাদের কোনো রূপ বিচার, শাস্তি ও তাদের কাজের জন্য অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত করা যাবে না।
২. জুলাই সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো বিরূপ মতামত গ্রহণ করা যাবে না।
৩. জুলাই যোদ্ধাদের হত্যাকারীদের বিচার ও গুম করে আটক, শাস্তি দানকারীদের বিচার ছাড়া নির্বাচন হতে পারবে না।
৪. জুলাই সনদের স্বীকৃতি দান না কারীদের নির্বাচনে অংশ গ্রহণ ও রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।
৫. জুলাই সনদ কোনো নাগরিক, রাজনীতিবিদ, প্রশাসনের বা সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে কেউ হোক অমান্য করতে পারবে না।
৬. জুলাই সনদে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি বা আদর্শ নির্ধারণ করা। যা ৯২ শতাংশ মুসলমানদের ধর্ম ইসলাম, ইসলামের সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, ইসলামের প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস। সব কর্মের ভিত্তি ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল এবং গণতন্ত্র। সব ধর্ম পালনের স্বাধীনতা ও ধর্মীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৭. জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী সবার চাকরি বা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা, চিকিৎসা, শিক্ষা ও পারিবারিক ভাতা ইত্যাদির ব্যবস্থা রাষ্ট্র গ্রহণ করবে।
৮. শাপলা হত্যাকাণ্ডের বিচার ও হেফাজতের দাবি মানতে হবে।
৯. পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ন্যায্যবিচার ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
এছাড়া রাষ্ট্র সংস্কারে আরও কিছু দাবি তুলেছে জাতীয় ঐক্য জোট। এসব দাবি হলো- লগি বৈঠার তাণ্ডবে মানুষ হত্যা, ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বর গণহত্যা, জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার। পুরাতন সংবিধান বাতিল। নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের মেন্ডেট নেওয়া। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেওয়া। নির্বাচন কমিশনের সংস্কার। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন ১৯৭২ এর ৯০বি ধারা কালো আইন বাতিল।
কালো টাকার মালিক পেশিশক্তি অস্ত্রধারী খুনি-সন্ত্রাসী সাবেক দুর্নীতিবাজ আমলাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা। যাবতীয় নির্বাচনী ব্যয়, পোস্টার, সভা সমাবেশ, নির্বাচনী প্রচারণা, পুলিং এজেন্ট নিয়োগ সংক্রান্ত সব ব্যয় নির্বাচন কমিশনকে বহন করতে হবে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় আসন সংখ্যা থাকবে ৩০০। কোনো উচ্চ কক্ষ নিম্ন কক্ষ প্রয়োজন নেই। ৩০০ আসনে নির্বাচন হতে হবে আনুপাতিক হারে ভোটের মাধ্যমে। নির্বাচনে সব দলকে সমান সুবিধা দিতে হবে। স্থানীয় নির্বাচনে কোনো দলীয় প্রতীক থাকবে না। নির্বাচন কমিশনের লোকবল দিয়ে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। সরকারি কোনো ব্যক্তি রিটার্নিং কর্মকর্তা হতে পারবে না।
এসএস/টিএ