ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে তিন দিনের চলমান মহাসড়ক ও রেল অবরোধ আজ পুলিশের সম্মানে আধা ঘণ্টা আগে বিকেল সাড়ে ৫টায় শেষ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এটি সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হওয়ার কথা ছিল।
তবে তারা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামীকালও একই দাবিতে আন্দোলন চলবে এবং গ্রেপ্তার হওয়া আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ম. ম. সিদ্দিক মিঞাকে মুক্তি দিতে হবে।
বিকেল সাড়ে ৫টায় অবরোধ ছাড়ার পর ধীরে ধীরে যানজট স্বাভাবিক হতে শুরু করে। আটকে পড়া ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানগুলো ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে থাকে। পাশাপাশি যাত্রীবাহী বাস ও অন্যান্য যানবাহনও চলতে শুরু করে।
রোববার সকাল ৬টা থেকে ঢাকা–খুলনা ও বরিশাল মহাসড়কসহ ভাঙ্গার বিভিন্ন স্থানে কাফনের কাপড় গায়ে জনতা সড়ক ও রেলপথে নেমে আসে। মনসুরাবাদ এলাকায় তারা সড়কে শুয়ে পড়ে স্লোগান দিতে থাকে— “আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম”, “রক্ত লাগলে রক্ত নে, ভাঙার মাটি ছেড়ে দে।” অবরোধকারীরা সকাল থেকেই নকশিকাঁথা ট্রেন আটকে দেন এবং খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ভাঙ্গা জংশনে দাঁড়িয়ে থাকে।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ভাঙ্গা পৌর শহরের দক্ষিণ পাড় বাসস্ট্যান্ড থেকে আলগী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তিনবারের সাবেক ইউপি সদস্য মো. এসকেন্দার মিয়া আন্দোলনকারীদের সামনে বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি বলেন, আমাদের আগামীকালের আন্দোলন চলবে। আমাদের ইউপি চেয়ারম্যানকে মুক্তি দিতে হবে।
তিনি বলেন, একটু আগে ওসি ও ভাঙ্গা সার্কেল এসপি এসে আমাদেরকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশের কথা জানিয়ে বলেছেন এখনই আন্দোলন বন্ধ করতে হবে। কিন্তু আমরা রাজি হইনি। আমরা জানিয়েছি, তাদের সম্মানে বিকেল সাড়ে ৫টায় রাস্তা ও রেল খুলে দেব। তবে আগামীকাল আবারও অবরোধ চলবে।
এসকেন্দার মিয়া বলেন,ভাঙার ইতিহাস ও ঐতিহ্য আমাদের রক্তে মিশে আছে। মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে প্রতিটি গণআন্দোলনে ভাঙ্গার মানুষ জীবন দিয়েছে, আন্দোলন করেছে। তাই আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত নগরকান্দায় গিয়ে নতুন আসনে আমরা যাব না। ভাঙ্গার মাটি আমরা কোনোভাবেই ছাড়ব না।
ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে কেটে ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করে গত ৪ সেপ্টেম্বর গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এর প্রতিবাদে ৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় অবরোধ কর্মসূচি। দাবি পূরণ না হওয়ায় রোববার থেকে ফের টানা তিন দিনের সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ শুরু হয়। ভাঙ্গার বিভিন্ন স্থানে সকাল ৬টার পর থেকে একযোগে অবরোধ চলে।