শেরপুর জেলা নির্বাচন অফিসে ভুয়া নাম-পরিচয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) করতে এসে মো. আমিন (২৮) নামের এক রোহিঙ্গা যুবককে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, আলম মিয়া নামে পরিচয় দিয়ে এনআইডির আবেদন করতে আসেন ওই যুবক। তিনি বাবার নাম আলী উল্লেখ করে শেরপুর পৌরসভার কসবা মোল্লাপাড়া ও শিবুত্তর এলাকায় নিজেকে ভোটার দাবি করেন। এ সময় তিনি জন্ম সনদ, নাগরিকত্ব সনদপত্র, পৌর কর রশিদসহ বিভিন্ন কাগজপত্র দাখিল করেন।
তবে কর্মকর্তাদের সন্দেহ হলে নথি যাচাইয়ের সময় দেখা যায়, তার জমা দেওয়া জন্মসনদে অসংগতি রয়েছে। অনলাইনে যাচাই করে জানা যায়, সনদটি শ্রীবরদী উপজেলার কুড়িকাহনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইস্যুকৃত। তার দেওয়া তথ্যে পিতামাতার জাতীয় পরিচয়পত্রও চট্টগ্রামের পুঠিয়া উপজেলায় পাওয়া যায়। বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজেকে রোহিঙ্গা বলে স্বীকার করেন।
পরে জানা যায়, তার প্রকৃত নাম মো. আমিন, বাবা জাহিদ হোসেন ও মাতা গুলবাহার। তিনি কক্সবাজারের উখিয়ার টাংহালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা এবং মূলত মিয়ানমারের নাগরিক।
আটক রোহিঙ্গা যুবক বলেন, আমি কক্সবাজারের উখিয়ার টাংহালি ক্যাম্পে থাকি। এ দেশের নাগরিক হওয়ার আশায় ভোটার আইডি কার্ড করতে শেরপুরে এসেছিলাম। কাজের জন্য পরিচয়পত্র পেলে সুবিধা হবে ভেবেই আলম নামে আবেদন করেছি।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম থেকে তাকে শাওন নামের এক ব্যক্তি এনআইডি করানোর জন্য শেরপুরে নিয়ে আসে। শাওন মূলত একজন দালাল তার সঠিক পরিচয় পাওয়া যায়নি তবে শুধু একটি ফোন নাম্বার আছে।
শেরপুর সদর থানার এসআই (নি) আশিকুর রহমান জানান, আটককৃত মো. আমিন ও তার দাখিলকৃত কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
শেরপুরের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক বলেন, সন্দেহজনক কাগজপত্র দেখে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করি। পরে তিনি নিজেই রোহিঙ্গা পরিচয় স্বীকার করেন। তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা খুব সতর্কতার সহিত ভোটার আইডি কাজগুলো করে থাকি।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবাইদুল আলম বলেন, রোহিঙ্গা যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের পর এর সঙ্গে আরও কারা জড়িত আছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আর দালাল শাওনকে ধরতে অভিযান চালানো হবে।
কেএন/টিকে