বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি পরিবর্তন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল। তার ধারণা, নির্বাচনের আগে জামায়াত ইসলামী মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তের ‘ভুল স্বীকার’ করে বিবৃতি দেবে।
মাসুদ কামাল তার ইউটিউব চ্যানেল ‘কথা’য় এক ভিডিওতে এমন ধারণার কথা বলেছেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাদের রাজনীতিতে কিছু পরিবর্তন আনছে বলে মনে করেন তিনি।
মাসুদ কামাল বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতের তৎকালীন নেতাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে বর্তমান নেতারা নীরব থেকেছেন। কিন্তু আমার কেন যেন মনে হয় এই নির্বাচনের আগে জামায়াত এই বিষয়ে একটু সরব হবে। আমার এটাও ধারণা যে জামায়াত হয়তো একাত্তরের সময় তাদের ভুল হয়েছিল, এই মর্মে কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে একটা বিবৃতি দেবে।’
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিজয়ের পর ছাত্রশিবিরের যারা নির্বাচিত হয়েছেন পুরো কমিটি নিয়ে তারা রায়ের বাজার বদ্ধভূমিতে গিয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সেখানে কবর আছে এবং সেখানে তারা শহীদদের জন্য দোয়া ও মোনাজাত করেছেন।
তবে ডাকসুতে নির্বাচিতরা রায়েরবাজারে গিয়ে দোয়া ও মোনাজাত করার সিদ্ধান্তটি জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এসেছে বলে দাবি করেছেন মাসুদ কামাল। তিনি বলেন, "এই ইসলামী ছাত্রশিবির নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে রায়েরবাজারে যায়নি। তারা তাদের মূল দলের সঙ্গে আলাপ করে গিয়েছে।
এ ব্যাপারে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এক ইন্টারভিউতে বলেছেন, ‘আমরা এটা সিদ্ধান্ত নিয়ে করেছি।’ মানে জামায়াত সিদ্ধান্ত দিয়েছে তোমরা ওখানে যাও।"
এটিকে জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক ধারার পরিবর্তনের ইঙ্গিত বলে মনে করেন এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কাকে ভোট দিবে? এমন প্রশ্ন সামনে রেখে মাসুদ কামাল বলেন, আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচন করতে না পারে তাহলে সম্ভাব্য অনেকগুলো ঘটনা ঘটতে পারে। একটা হলো, আওয়ামী লীগের কেউ ভোট দিতেই যাবে না।
আরেকটা হতে পারে আওয়ামী লীগ তাদের কাছে যাবে যাদের কাছে নিরাপত্তা পায়। এই নিরাপত্তাটা কিন্তু গত কয়েক মাসে তারা বিএনপির কাছ থেকে পায়নি। অনেক ক্ষেত্রে জামায়াতের কাছ থেকে পেয়েছে। আর জাতীয় পার্টির তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষমতাই নেই।’
আওয়ামীপন্থী ভোটারদের জামায়াতকে ভোট দেওয়ার বড় বাধা মুক্তিযুদ্ধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মনে করে তারা হলো মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী দল। তারা কী করে এমন একটা দলকে ভোট দেবে যে দলটা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে যদি জামায়াত বলে যে মুক্তিযুদ্ধে আমাদের দলের ওই সময় নেতৃত্ব যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছে, যে ভূমিকা রেখেছে, তার জন্য আমরা লজ্জিত। আমরা জাতির কাছে ক্ষমা চাই।
তাহলে কিন্তু ওই আওয়ামীপন্থী ভোটারদের দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিতে মুক্তিযুদ্ধের যে ইস্যুটা সামনে চলে আসতো সেটি অনেকটা কমে যাবে।‘ এই সুযোগটাও জামায়াত ইসলামী নিতে পারেন বলে মনে করেন মাসুদ কামাল।
কেএন/টিকে