বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে আফগানিস্তানের প্রয়োজন ছিল ২৩ রান, হাতে ছিল তিন উইকেট। ১০ বলে ২০ রানে অপরাজিত রশিদ খান ক্রিজে থাকায় আফগানদের জয়ের পক্ষে বাজি ধরার লোক কম ছিল না। কিন্তু মুস্তাফিজুর রহমানের বলে শর্ট থার্ডম্যান অবস্থানে দাঁড়ানো তাসকিন আহমেদের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রশিদ। আফগানদের ৮ রানের হারের জন্য এই আউটটিকেই টার্নিং পয়েন্ট মনে করছেন রশিদ।
আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ খান তাদের আট রানের পরাজয়ে নিজের উইকেটকেই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে সুপার ফোরের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ।
টস জিতে ব্যাটিং নেয়া বাংলাদেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫৪ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ গড়ে। ইনিংসের শুরুতে তানজিদ হাসান তামিম ও সাইফ হাসান মিলে দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন টাইগারদের। সাইফ ৩০ রান করে আউট হলেও অর্ধশতক তুলে নেন তানজিদ তামিম। তবে এই বাঁহাতির বিদায়ের পর বাংলাদেশের রানের গতি মন্থর হয়ে পড়ে। আফগানিস্তানের হয়ে রশিদ খান ও নূর আহমদ দুইটি করে উইকেট নেন, আর একটি নেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
জবাবে আফগানিস্তান ২০তম ওভারের শেষ বলে অলআউট হয়ে যায় ১৪৬ রানে। এই হারে সুপার ফোরের রাস্তা আফগানদের জন্যও কঠিন হয়ে গেছে। শেষ ম্যাচে লঙ্কানদের হারাতেই হবে আফগানদের।
এদিন শেষ স্বীকৃত ব্যাটার হিসেবে অধিনায়ক রশিদের ওপরেই ম্যাচ শেষ করে আসার ভার পড়েছিল। শেষ ২ ওভারে জয়ের জন্য ২৩ রান দরকার পড়লেও মোস্তাফিজুর রহমানের স্লোয়ারে পরাস্ত হয়ে শর্ট থার্ডম্যানে ধরা পড়েন তিনি। এতে ম্যাচের সমীকরণ দাঁড়ায় ১০ বলে ২৩ রান, হাতে মাত্র দুটি উইকেট। নবম উইকেটে নেমে নূর আহমদ নয় বলে ১৪ রান করে কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও জয় ছিনিয়ে আনতে তা যথেষ্ট হয়নি।
ম্যাচ শেষে রশিদ খান বলেন, তার অকাল বিদায়ই হারের মূল কারণ এবং আফগান ব্যাটাররা রান তাড়ায় কিছু ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন শট’ খেলেছে। তবে তিনি বোলিং ইউনিটকে কৃতিত্ব দেন বাংলাদেশকে ১৬০ রানের নিচে আটকে রাখার জন্য।
রশিদের ভাষায়, 'আমরা শেষ পর্যন্ত ম্যাচে ছিলাম। আমি আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত ম্যাচে ছিলাম, কিন্তু শেষটা করতে পারিনি। বর্তমানে ১৫ বলে ৩০ রান করা সম্ভব, কিন্তু তখন আমরা নিজেদের ওপর অতিরিক্ত চাপ নিয়েছিলাম এবং শটগুলো সঠিকভাবে খেলতে পারিনি।'
তিনি আরও বলেন, 'যেভাবে আমরা বোলিংয়ে ফিরে এসেছি, সেটা বিশাল কাজ। ১০ ওভারে ওরা ৯০ রান তুলেছিল, তারপরও তাদের ১৬০-র নিচে আটকে রাখা বড় সাফল্য। আমার মনে হয় উইকেটটা ১৬০-১৭০ রানের উপযোগী ছিল, কিন্তু আমরা অযথা কিছু দায়িত্বজ্ঞানহীন শট খেলেছি।'
সুপার ফোরে ওঠার লড়াইয়ে আফগানিস্তানের পরের ম্যাচ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। বৃহস্পতিবারের (১৮ সেপ্টেম্বর) ম্যাচের আগে রশিদ দলের খেলোয়াড়দের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে এবং মানসিকভাবে শক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, 'এটা গুরুত্বপূর্ণ সময়, বিশেষ করে এশিয়া কাপে, যেখানে ম্যাচ খুব কম হয়, আর প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। পরের ম্যাচ বড় চ্যালেঞ্জ, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আমাদের ভালোভাবে প্রস্তুত হতে হবে। ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং মানসিকভাবে দৃঢ় হতে হবে- এটাই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।'
ইএ/টিএ