যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) টিউলিপ সিদ্দিক অভিযোগ করেছেন যে, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে ‘ভুয়া’ পরিচয়পত্র ব্যবহার করছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই কাগজপত্রের মাধ্যমে তাকে দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত প্রতিবেদনে টিউলিপের এই অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেখা যাওয়া নথিপত্রে তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখানো হয়েছে, যা তার আগের দাবির সঙ্গে মেলে না।
যুক্তরাজ্যের এমপির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ প্রায় এক বছর ধরে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে টিউলিপের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি বলেন, “তারা আমাদের আইনজীবী দলের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি এবং কোনো ভিত্তিহীন দাবির জন্য প্রমাণও দেয়নি। এবার তারা এমন কাগজপত্র জাল করেছে, যা পুরোপুরি ভুয়া ও জাল করার লক্ষণ স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। এই নথিপত্রের সত্যতা নিয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।”
নথিপত্রে দেখা গেছে, ২০০১ সালে ১৯ বছর বয়সে টিউলিপ বাংলাদেশের পাসপোর্ট পেয়েছিলেন। ২০১১ সালে তিনি বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পেয়েছিলেন। তবে নথিপত্রে অনেক অসংগতি ও অনিয়ম লক্ষ্য করা গেছে। উদাহরণস্বরূপ, টিউলিপের ঠিকানা হিসেবে ঢাকার একটি বাড়ি উল্লেখ করা হয়েছে, যা তার খালা এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মালিকানাধীন।
টিউলিপের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানাচ্ছে, তিনি কখনো ঢাকায় থাকেননি এবং তিনি কখনো জাতীয় পরিচয়পত্র পাননি। শুধুমাত্র ছোটবেলায় একটি বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছিল। তাদের মতে, পরিচয়পত্রটি নতুন ‘স্মার্ট কার্ড’ ফরম্যাটে না থাকায় তার সত্যতা সহজে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এই নথিপত্রগুলো বাংলাদেশের চলমান একটি দুর্নীতির মামলায় টিউলিপের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হতে পারে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, টিউলিপ তার খালাকে প্রভাবিত করে তার মা, ভাই ও বোনের জন্য প্লট বরাদ্দ নিয়েছিলেন।
টিউলিপের মা-বাবা দুজনই বাংলাদেশি নাগরিক হওয়ায় তিনি যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ, দুই দেশের নাগরিকত্ব রাখার সুযোগ পান। তার আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান স্টিফেনসন হারউড জানিয়েছে, টিউলিপের কখনো বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি ছিল না এবং শৈশবের পর থেকে কোনো বাংলাদেশি পাসপোর্টও রাখেননি।
বিগত কয়েক বছরে টিউলিপ নিয়মিত বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন এবং এ ঘটনায় তিনি ইতিমধ্যেই আইনগত প্রতিক্রিয়া নিচ্ছেন।
ইউটি/টিএ