অস্কারজয়ী হলিউডি অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ভ্যারাইটি লিখেছে, স্পেনের সান সেবাস্তিয়ান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘ক্যুতুর’ সিনেমার প্রিমিয়ারে হাজির হন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। অভিনেত্রীকে পেয়ে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন যুক্তরাষ্ট্রের বাকস্বাধীনতা নিয়ে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে হতাশা প্রকাশ করেন অভিনেত্রী।
জোলিকে প্রশ্ন করা হয়, একজন শিল্পী এবং একজন আমেরিকান হিসেবে তিনি কোন বিষয় নিয়ে ভীত কি না।
জবাব দেওয়ার আগে দীর্ঘশ্বাস ফেলে জোলি বলেন, “এটি খুবই কঠিন প্রশ্ন। আমি আমার দেশকে ভালোবাসি, কিন্তু এই মুহূর্তে আমি আমার দেশকে চিনতে পারছি না। আমি সব সময় আন্তর্জাতিকভাবে থেকেছি। আমার পরিবার, বন্ধু, আমার জীবন সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে আছে। এখন সময় এতটাই গুরুতর, যে কোনো কিছু যা কারো ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বা প্রকাশের অধিকার সীমিত করে, সেটি খুবই বিপজ্জনক।"
জোলি আরও বলেন, “আমাদের এই সময়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। মেপে কথা বলতে হবে।"
এই মন্তব্য জোলি করেছেন এমন সময়, যখন যুক্তরাষ্ট্রের ডিজনির মালিকানাধীন এবিসি চ্যানেল জনপ্রিয় লেট-নাইট অনুষ্ঠান ‘জিমি কিমেল লাইভ’ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ডানপন্থী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ড নিয়ে মন্তব্য করেছেন তাই অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ওই অনুষ্ঠানটি বাতিলের পেছনে মূল কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে শোর হোস্ট জিমি কিমেলের বক্তব্য। যে বক্তব্যে তিনি কনজারভেটিভ প্রভাবশালী চার্লি কার্কের হত্যার পটভূমিতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও বিনোদন অঙ্গনে চলছে তোলপাড়। নতুন করে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকারের বিষয়টিও। সেই তালিকায় শামিল হলেন এবার জোলিও।
‘ক্যুতুর’ সিনেমার প্রেক্ষাপট তিন নারীর জীবনকাহিনী।
যেখানে জোলি অভিনয় করেছেন এক মার্কিন নারী চলচ্চিত্র পরিচালকের ভূমিকায়, যিনি প্যারিসের ফ্যাশন দুনিয়ায় নিজের জায়গা খুঁজে নেওয়ার লড়াই করছেন। এর মধ্যেই তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার।
জোলি তার বাস্তব জীবনের সঙ্গে চরিত্রটির মিল পেয়েছেন। তা নিয়ে অভিনেত্রী বলেন, “আমি দশ বছর আগে ডাবল মাস্টেকটমি এবং ওভারিয়ান ও ফ্যালোপিয়ান টিউব অপসারণ করেছি।
এটি আমার ব্যক্তিগত পছন্দ, এবং আমি তা নিয়ে অনুশোচনায় নেই। নারীর ক্যান্সার তাদের আত্মচেতনায় গভীর প্রভাব ফেলে। এই সিনেমার মাধ্যমে আমরা দেখাচ্ছি যে, ক্যান্সার ধরা পড়লেও জীবনে আনন্দ বজায় রাখা সম্ভব।”
অনুষ্ঠানে মায়ের গয়না পরে হাজির হয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। তা নিয়ে আবেগ প্রকাশ করে অভিনেত্রী বলেন, “আমি আমার মায়ের নেকলেস পরেছি। মা মারা গেছেন, মা থাকলে এই ধরনের কাজে সমর্থন করতেন। তিনি বলতেন, প্রতিটি দিনকে পূর্ণভাবে বাঁচতে হবে এবং জীবনের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।”
‘ক্যুতুর সিনেমাটি বানিয়েছেন ফরাসি নির্মাতা অ্যালিস ভিনোকু। ৭ সেপ্টেম্বর টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথম প্রিমিয়ার হয় সিনেমাটির।
এমকে/এসএন