ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে এবার ১২ দফা অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগ তুলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।
আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তুলে ধরেন তারা। এর আগে ছাত্রদলসহ কয়েকটি প্যানেলের প্রার্থীরাও সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিভিন্ন অভিযোগ তোলেন।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মেঘমল্লার বসু বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকেই একটি বিশেষ মহল আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে এবং নির্বাচনের দিন ভুয়া প্রেস-পাস ব্যবহারসহ নানা উপায়ে নির্বাচন প্রভাবিত করেছে।
প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ ও দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ব্যর্থতার কারণে অনিয়ম সমাধান হয়নি, ফলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, জয়-পরাজয় যাই হোক না কেন, তাদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় লড়াই অব্যাহত রাখব। সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অনিয়ম শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশিত ভোটাধিকারকে ব্যাহত করেছে তবু আমরা আন্দোলন-সংগ্রামের পথেই আছি।
১২ দফা অনিয়ম ও অসঙ্গতিগুলো হলো- টিএসসি সহ বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছাড়াই ভোটার তালিকায় স্বাক্ষর দেওয়া এবং নির্দিষ্ট প্যানেলের পক্ষে ব্যালট সরবরাহ করা হয়েছে; ভোটার তালিকা ও সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশের আবেদন করা হলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি; ব্যবহৃত ব্যালটে কোনো ক্রমিক নম্বর ছিল না; ছাপানো, সরবরাহকৃত, বাতিল ও ফেরত ব্যালটের হিসাব প্রকাশ করা হয়নি; ব্যালট কোথায় ছাপানো হয়েছে, তা প্রকাশ করা হয়নি; নকল ব্যালট ফাঁসের অভিযোগ রয়েছে; নীলক্ষেতে একটি ছাপাখানায় বিপুলসংখ্যক অরক্ষিত ব্যালট পেপার উদ্ধার হলেও প্রশাসনের তদারকি ছিল না এবং ওএমআর মেশিনে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে; এক প্রার্থীর ভোট সফটওয়্যারে অন্য প্রার্থীকে প্রদর্শিত হয়েছে।
এছাড়াও ভোট গণনা-পরবর্তী সফটওয়্যার পরীক্ষায় ভোটার ও প্রার্থীদের উপস্থিত রাখা হয়নি; ভোটের আগের রাতে এজেন্ট তালিকা প্রকাশ করে অনেক প্রার্থীর প্রস্তাবিত এজেন্ট বাদ দেওয়া হয়; ভোটারদের আঙুলে অমোচনীয় কালি ব্যবহার করা হয়নি; একই ব্যক্তি একাধিকবার ভোট দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে; ভোট গণনায় গড়িমসি, নির্দিষ্ট প্রার্থীর অবৈধ উপস্থিতি ও পোলিং এজেন্টদের দূরে রাখা হয়েছে; পোলিং অফিসার নিয়োগে অস্পষ্টতা ছিল; প্রশাসন কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত অফিসাররা ভুয়া অভিযোগ তুলে নির্বাচন প্রভাবিত করেছেন এবং অস্বচ্ছ ব্যালট বক্স ব্যবহার, মার্কার সংকট ও বলপেন দিয়ে ভোট গ্রহণের কারণে বহু ভোট গণনায় বাদ পড়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে কথা বলা একটা আইনি বিষয়। নির্বাচনের বৈধতা বা অবৈধতা আমি দিতে পারি না কিন্তু নির্বাচন যে অস্বচ্ছ হয়েছে এটা একদম পানির মত পরিষ্কার। এটা ক্লিয়ারলি আমাদের বলতে পারতে হবে।
মেঘমল্লার বসু বলেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ওঠা প্রশ্নের সদুত্তর যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে না পাওয়া যায় তখন আমরা সবার সাথে যোগাযোগ করে সমন্বিতভাবে অবস্থান নিয়ে কোর্টে যাব। কিন্তু সেটি আসলে আমি আমার জায়গা থেকে বললাম, অন্য কেউ না গেলে আমি কোর্টে যাব।
এবি/টিএ