ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোট কারচুপি, প্রশাসনের পক্ষপাত এবং বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ১২ দফা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরা হয়।
১২ দফা অনিয়ম ও অসঙ্গতিগুলো হলো—
১. টিএসসিসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছাড়াই ভোটার তালিকায় স্বাক্ষর দেওয়া এবং নির্দিষ্ট প্যানেলের পক্ষে ব্যালট সরবরাহ করা হয়েছে।
২. ভোটার তালিকা ও সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশের আবেদন করা হলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
৩. ব্যবহৃত ব্যালটে কোনো ক্রমিক নম্বর ছিল না; ছাপানো, সরবরাহকৃত, বাতিল ও ফেরত ব্যালটের হিসাব প্রকাশ করা হয়নি।
৪. ব্যালট কোথায় ছাপানো হয়েছে, তা প্রকাশ করা হয়নি; নকল ব্যালট ফাঁসের অভিযোগ রয়েছে।
৫. নীলক্ষেতে একটি ছাপাখানায় বিপুল সংখ্যক অরক্ষিত ব্যালট পেপার উদ্ধার হলেও প্রশাসনের তদারকি ছিল না।
৬. ওএমআর মেশিনে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে; এক প্রার্থীর ভোট সফটওয়্যারে অন্য প্রার্থীকে প্রদর্শিত হয়েছে।
৭. ভোট গণনা-পরবর্তী সফটওয়্যার পরীক্ষায় ভোটার ও প্রার্থীদের উপস্থিত রাখা হয়নি।
৮. ভোটের আগের রাতে এজেন্ট তালিকা প্রকাশ করে অনেক প্রার্থীর প্রস্তাবিত এজেন্ট বাদ দেওয়া হয়।
৯. ভোটারদের আঙুলে অমোচনীয় কালি ব্যবহার করা হয়নি; একই ব্যক্তি একাধিকবার ভোট দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
১০. ভোট গণনায় গড়িমসি, নির্দিষ্ট প্রার্থীর অবৈধ উপস্থিতি ও পোলিং এজেন্টদের দূরে রাখা হয়েছে।
১১. পোলিং অফিসার নিয়োগে অস্পষ্টতা ছিল; প্রশাসন কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত অফিসাররা ভুয়া অভিযোগ তুলে নির্বাচন প্রভাবিত করেছেন।
১২. অস্বচ্ছ ব্যালট বক্স ব্যবহার, মার্কার সংকট ও বলপেন দিয়ে ভোট গ্রহণের কারণে বহু ভোট গণনায় বাদ পড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মেঘমল্লার বসু অভিযোগ করে বলেন, ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে আমাদের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই অপপ্রচার চালানো হয়েছে। ভুয়া প্রেস পাস ব্যবহার থেকে শুরু করে সফটওয়্যারে কারচুপি সব মিলিয়ে নির্বাচন প্রভাবিত করা হয়েছে। প্রশাসন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকেরাও অনিয়ম ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এতে পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম জয়-পরাজয় যাই হোক, তাদের অধিকার রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাব। সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচন শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকারকে ব্যাহত করেছে, তবে আমাদের আন্দোলন–সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
মেঘমল্লার বসু বলেন, এসব বিষয়ে বারবার অবহিত করা হলেও প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে কালক্ষেপণ করেছে। এর ফলে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫ একটি অগণতান্ত্রিক, অনিয়মপূর্ণ ও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হিসেবে চিহ্নিত হতে চলেছে।
এবি/টিএ