রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ জানিয়েছেন, তার দেশের ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বা ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে আক্রমণ করার কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে, মস্কোর বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের ‘আক্রমণের’ জবাবে ‘চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া’ দেয়া হবে বলে সতর্ক করেন তিনি।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে দেয়া এক বিস্তৃত বক্তব্যে ল্যাভরভ বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে হুমকি ‘দিন দিন বেড়েই চলেছে’।
ল্যাভরভ তার বক্তব্যে ইসরায়েলেরও কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার নিন্দা রাশিয়া করলেও গাজায় ফিলিস্তিনিদের ‘নৃশংস হত্যাকাণ্ড’ এবং পশ্চিম তীরকে দখলের পরিকল্পনার কোনো ন্যায়সংগততা নেই।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৫,৯২৬ জন নিহত হয়েছেন। অপরদিকে, ৭ অক্টোবর হামলায় প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল।
ল্যাভরভ বলেন, ইসরায়েল তার হামাস বিরোধী অভিযানকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও যেমন: কাতারে বিমান হামলা চালাচ্ছে, যা পুরো অঞ্চলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি করছে।
ইরান নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ল্যাভরভ পশ্চিমা শক্তিগুলোকে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ধ্বংস করার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, রাশিয়া ও চীনের নেতৃত্বে একটি শেষ মুহূর্তের প্রস্তাব ব্যর্থ হওয়ার পর ইরানের বিরুদ্ধে পুনরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, যা রাশিয়ার মতে ‘অবৈধ’।
ইউরোপে উত্তেজনার বিষয়ে ল্যাভরভ বলেন: ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগের হুমকি - বিশেষ করে, তাকে ন্যাটো ও ইইউতে হামলার পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করা - এখন সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন বারবার এসব উসকানিকে ভিত্তিহীন বলে প্রমাণ করেছেন। রাশিয়ার অতীতে কখনও এমন কোনো পরিকল্পনা ছিল না, এখনও নেই। তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো আক্রমণ হলে, তা চূড়ান্তভাবে প্রতিহত করা হবে।’
এদিকে, এস্তোনিয়া অভিযোগ করেছে যে, রাশিয়ান যুদ্ধবিমান তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। পোল্যান্ডের আকাশেও রুশ ড্রোন প্রবেশের অভিযোগে সম্প্রতি ন্যাটো একটি প্রতিরক্ষা অভিযান চালায়।
এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ন্যাটো দেশগুলো উচিত তাদের আকাশসীমায় রুশ বিমান গুলি করে ভূপাতিত করা। আর ন্যাটো জানিয়েছে, যে কোনো সামরিক বা অসামরিক উপায়ে নিজেদের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
ইউক্রেনে যুদ্ধের প্রসঙ্গে ল্যাভরভ বলেন, ‘বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের মধ্যে আমরা ইউক্রেন সংকটের একটি বাস্তবসম্মত সমাধানের আগ্রহ দেখি, এবং একই সঙ্গে আদর্শবাদ ত্যাগ করে যৌক্তিক সহযোগিতার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে।’
সূত্র: আল জাজিরা।
কেএন/টিকে