দাতা সংস্থা আইএমএফ এর শর্ত পূরণ করেছে বাংলাদেশ। দাতা সংস্থাটির ঋণের অর্থ ছাড়ে শর্ত ছিল সেপ্টেম্বরে বৈদেশিক মুদ্রার নীট রিজার্ভ রাখতে হবে অন্তত ১৮ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন, যেখানে বাংলাদেশের আছে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার। আর ডিসেম্বর শেষে লক্ষ্য ১৯ দশমিক ৯০ বিলিয়ন, সেটাও পূরণ হবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আওয়ামী আমলের শেষ দুই বছরে, নানা সঙ্কটে দ্রুত ক্ষয় হতে থাকে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ। ২০২১ থেকে পরের তিন বছরে, ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে যা নেমে যায় এক তৃতীয়াংশে। ফলে, সময়মতো আমদানি ব্যয় পরিশোধ করা নিয়ে তৈরি হয় দুশ্চিন্তা। বাড়তে থাকে আন্তর্জাতিক বহু প্রতিষ্ঠানের কাছে দায়-দেনা। তবে, নতুন গভর্নর নজর দেন এই অবস্থার উন্নয়নে। এই সময়ে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধের পাশাপাশি, রিজার্ভেও যোগ হয় উল্লেখযোগ্য অর্থ।
তবে, বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দর ধরে রাখতে দেড় মাসে প্রায় পৌনে দুই বিলিয়ন ডলার বাজার থেকে তুলে নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যা যোগ হয় বৈদেশিক মুদ্রার মজুদে। যার ফলে, ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিট রিজার্ভ দাঁড়ায় ২০ বিলিয়নের ঘরে। যদিও, আইএমএফের শর্ত ছিল সাড়ে ১৮ বিলিয়ন। অর্থাৎ, সে হিসাবে শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ইম্পোর্টেট চাপ এই মুহূর্তে ব্যাংকগুলোতে কম। সেই তুলনায় ডলারের সাপ্লাই তাদের মধ্যে বেশি আছে এ কারণে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকেই যোগাযোগ করে যাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারগুলো ক্রয় করে।
তথ্য অনুযায়ী, আগামী ডিসেম্বর নাগাদ ১৯ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার নিট রিজার্ভ রাখার শর্ত রয়েছে আইএমএফের। তবে, প্রবাসী আয়ের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে তা আরো বাড়ার আশা করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এই বিশ্লেষক মনে করছেন, রিজার্ভের শর্ত পূরণ ইতিবাচক বার্তা দিবে আন্তর্জাতিক মহলে। আর, দর ধরে রাখার কৌশল হিসেবে, ডলার কেনার পক্ষেও তিনি।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, আইএমএফের টার্গেট তো বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েকবারই পূরণ করতে পেরেছে। আমি আপাতত এটাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। কারণ বিনিময় হারটা সব সময় এমন হতে হয় যে আপনাকে একদম মধ্যম জায়গায় রাখতে হয়। যাতে কি না রপ্তানিকারক ও আমদানিকারক ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
দেশে বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সোয়া ৩১ বিলিয়ন ডলার। বিপিএম৬ অনুযায়ী যা ২৬ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন।
এবি/টিকে