চীনে নির্মাণ কাজ শুরুর তিন বছরের বেশি সময় পর যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ সেতু হুয়াজিয়াং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন। রোববার এই সেতুর উদ্বোধন করা হয়েছে বলে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নতুন এই সর্বোচ্চ সেতুটি একই প্রদেশের আরেকটি সেতুর দখলে থাকা রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে।
দেশটির দুর্গম দক্ষিণাঞ্চলীয় গুইঝো প্রদেশে নতুন সেতুটির অবস্থান। নদী ও বিশাল গিরিখাতের ওপর নির্মিত ৬২৫ মিটার (২ হাজার ৫১ ফুট) উঁচুতে দাঁড়িয়ে আছে হুয়াজিয়াং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন সেতু। এর আগে ৫৬৫ মিটার উচ্চতার বেইপানজিয়াং সেতু ছিল বিশ্বের সর্বোচ্চ সেতু। আগের সর্বোচ্চ সেতুটিও একই প্রদেশে অবস্থিত।
রোববার চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত ড্রোন ফুটেজে দেখা যায়, সেতুটির নীল রঙের বিশাল সহায়ক টাওয়ার আংশিকভাবে মেঘে ঢেকে গেছে। এমন অবস্থায় সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
সেতু প্রকল্পের প্রকৌশলী ও স্থানীয় কর্মকর্তাসহ বিপুলসংখ্যক মানুষ সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জড়ো হয়েছিলেন। তারা সেতুটি নিয়ে সরাসরি সম্প্রচারিত সাক্ষাৎকারে গর্ব ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে গুইঝো প্রদেশের পরিবহন বিভাগের প্রধান ঝাং ইয়িন বলেন, হুয়াজিয়াং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন সেতু চালু হওয়ায় দুই পাশের মানুষের যাতায়াতের সময় দুই ঘণ্টা থেকে কমে দুই মিনিটে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, সেতুটি আঞ্চলিক পরিবহন ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে নতুন গতি সঞ্চার করেছে।
গত কয়েক দশকে অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে চীন। দেশটি দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও নগরায়ণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দুর্গম গুইঝো প্রদেশে হাজার হাজার সেতু রয়েছে। এর মধ্যে বিশ্বের সর্বোচ্চ দুটি সেতুও রয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া বলেছে, বিশ্বের সর্বোচ্চ ১০০ সেতুর প্রায় অর্ধেকই গুইঝো প্রদেশে অবস্থিত। সিনহুয়া বলছে, হুয়াজিয়াং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন সেতু নির্মাণে তিন বছরেরও বেশি সময় লেগেছে। ১ হাজার ৪২০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির প্রধান স্প্যান এটিকে পাহাড়ি এলাকায় নির্মিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্প্যানের সেতু বানিয়েছে।
তবে নিজস্ব কাঠামোর উচ্চতা অনুযায়ী বিশ্বের সর্বোচ্চ সেতু এখনও ফ্রান্সের মিলাও সেতুর রেকর্ডে আছে। এই সেতুর উচ্চতা ৩৪৩ মিটার।
সূত্র: এএফপি।