স্ন্যাপব্যাক নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর ইরান যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।
মেহের নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রিসভার বৈঠকে পেজেশকিয়ান বলেন, ইরান এখনো প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্কের পথে অটল রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের পথ হলো দৃঢ়তা, জনগণের শক্তি এবং মর্যাদাপূর্ণভাবে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হওয়া।
ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিস্তৃত ও গঠনমূলক সম্পর্কের মাধ্যমে ইরানের বিরোধীরা কখনো তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না। ইরান যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত। জনগণের জীবন ও জীবিকা সরকারের মূল মনোযোগের কেন্দ্রে রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট স্মরণ করিয়ে দেন, আমেরিকা অতীতে নিষেধাজ্ঞা ও যুদ্ধের মাধ্যমে ইরানের রফতানি ব্যাহত করার চেষ্টা করেছিল; কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, অনেক দেশ প্রাকৃতিক গ্যাস বা তেলের মতো সম্পদ ছাড়াই উন্নতি করেছে। ইরানও বিশেষজ্ঞ, মেধাবী ও জনগণের ঐক্যের ওপর নির্ভর করে তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে উন্নয়ন কর্মসূচি এগিয়ে নেবে।
পারমাণবিক অস্ত্রের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমরা কখনো পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করিনি, ভবিষ্যতেও করব না। পেজেশকিয়ান জানান, ইরান সবসময় ন্যায়সংগত ও স্বচ্ছ আলোচনায় প্রস্তুত। তবে এমন কোনো আলোচনায় যাবে না, যা দেশকে নতুন সমস্যার মুখে ফেলতে পারে।
শুক্রবার জাতিসংঘে রাশিয়া ও চীনের প্রস্তাব ব্যর্থ হওয়ার পর ১০ বছর পর রোববার থেকে ইরানেরর ওপর নতুন করে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা চালু হয়। এতে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির বিভিন্ন অস্ত্রচুক্তি এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। কার্যকর হয়েছে জরিমানা।
স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে তেহরান। দেশটির এক আইনপ্রণেতা ইসমাইল কাওসারি জানান, এ বিষয়ে পার্লামেন্টে আলোচনার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তবে, ইরানকে কোনো ধরনের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ না নিতে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। তারা বলেন, নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ মানে এই নয় যে কূটনীতির রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে।
পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করে এমন কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে ইরানকে আইনীভাবে আবারও আলোচনার টেবিলে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। তবে তেহরান বলছে, অন্যায় ও অন্যায্য দাবি মানার পরিবর্তে নিষেধাজ্ঞাই মাথা পেতে নেবে ইরান।
এমআর/টিকে