বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দলীয় লোগো পরিবর্তন হচ্ছে। এ নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও লেখক জাহেদ উর রহমানের প্রশ্ন—জামায়াত কি তার নিজের রাজনীতি নিয়ে এখন লজ্জিত?
সম্প্রতি জাহেদ উর রহমান নিজের ইউটিউব চ্যানেল জাহেদস টেইক-এ এসে এ প্রসঙ্গে কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী সম্ভবত তাদের দলীয় লোগো পাল্টাচ্ছে। নতুন লোগো আগের লোগোর সঙ্গে খুব বড় পার্থক্য রয়েছে।
আমার প্রশ্ন— জামায়াত কি তার নিজের রাজনীতি নিয়ে এখন লজ্জিত, সে কি তার নিজের রাজনীতি ছুড়ে ফেলতে চাইছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘কয়েক দিন আগে একটা কলাম লিখেছিলাম ডাকসু নির্বাচন নিয়ে, হেডলাইন ছিল ডাকসু-জাকসু জিতে কি জামায়াত-শিবির রাজনীতিতে হারল। আমরা প্রচুর প্রশংসা করেছি ডাকসুতে ছাত্রশিবির নানা রকম ব্রিলিয়ান্ট পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা ছাত্রদের কল্যাণের জন্য কাজ করেছে।
কোচিংয়ের সময় সাহায্য করেছে। মেসে রেখেছে। হলে প্রয়োজনের সময় ছাত্রদের পাশে থেকেছে। পানির ফিল্টার দিয়েছে, কারো ফ্যান লাগলে দিয়েছে।
কারো টিউশন ফি দিতে সমস্যা হচ্ছে তাকে সেখানে সাহায্য করেছে। নানা কিছু, নানা উদ্ভাবনী কৌশলের প্রশংসা হয়েছে এবং এটাও জানা যায় ছাত্রদের পরিবার সমস্যায় পড়লে সাহায্য করেছে। অনেক টাকা খরচ হয়েছে। তবে বলে রাখি ডাকসু নির্বাচনে ব্যয় নিয়ে আইনে কী আছে আমি জানি না।’
জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘জামায়াত তাদের ইসলামী রাজনীতি হঠাৎ ভাটা দিয়ে মধ্যপন্থী, কল্যাণমূলক পথে যেতে শুরু করেছে, সেটি স্পষ্ট।
তারা এখন এমন প্রার্থীদের মনোনয়ন দিচ্ছে, যারা হিজাব পরেন না, পুরুষ প্রার্থীরা প্রচলিত পোশাকে ঘোরেন; জামায়াত-শিবির তাদের প্রতিক্রিয়াশীল এক ধরনের রক্ষণশীল রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসছে বলে অনেকে প্রশংসা করছেন।’
তিনি বলেন, “জামায়াতের পুরনো লোগোতে ছিল গম্বুজ, ‘আল্লাহ’ লেখাসহ ‘দ্বীন কায়েম করো’—এসব স্পষ্টভাবে দেখা যেত। নতুন লোগো একবারেই ভিন্ন, এর মধ্যে কোনোটিই দেখা যাচ্ছে না, কিছু সংবাদে বলা হয়েছে, কলমের দিকে আল্লাহু লেখা থাকতে পারে, কিন্তু প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। সমালোচনার পর আবার যোগও করতে পারেন।”
তিনি প্রশ্ন করেন, ‘জামায়াত কি তার নিজের রাজনীতির জন্য লজ্জিত। কেউ কি তাদের এমন করছে, যার জন্য তারা চাপে পড়ছে। তাই কৌশল হিসেবে এটা সরিয়ে রাখছে। আমি প্রায় একটা কথা বলি, ছাত্রশিবির কৌশল করতেই পারে। জামায়াত কৌশল করতে পারে।’
জাহেদ উর রহমান আরো বলেন, ‘জামায়াত দাবি করে, তাদের মতবাদ মানব রচিত নয়। এটা ডিভাইন। এটা সরাসরি স্রষ্টা থেকে এসেছে। এটা সত্য। কোরআন-সুন্নাহকে ভিত্তি করে, হাদিসকে ভিত্তি করেই তারা তাদের শাসন কায়েম করবে বলে। সুতরাং আল্লাহর কাছ থেকে আসা আইন বিধান হঠাৎ করে ভেঙে ফেললাম, কৌশল করলাম, এই জিনিসগুলো করা যায় না।
সুতরাং আর সব দলের গঠনতন্ত্র এবং তার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য পাল্টে ফেলার সঙ্গে জামায়াতের পাল্টে ফেলার মধ্যে দুস্তর ব্যবধান আছে। যেহেতু তারা ইসলামের কথা বলে।’
এসএন