পাকিস্তানের সাবেক জামায়াত-ই-ইসলামী (জেআই) সিনেটর মোশতাক আহমদকে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তিনি গ্লোবাল সুমুদ বহরে পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। পাক-ফিলিস্তিন ফোরাম নামের একটি অধিকার সংগঠনের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে।
এক্সে দেওয়া পোস্টে সংগঠনটি লিখেছে, ‘সিনেটর মোশতাক আহমদ খানকে ইসরায়েল গ্রেপ্তার করেছে।
’
তারা আরো জানায়, ‘শুধু একটি নৌযান পালাতে সক্ষম হয়েছে—পর্যবেক্ষক নৌকা, যার দায়িত্ব ছিল তথ্য সংগ্রহ করে নিরাপদে ফিরে যাওয়া। আমাদের অন্য প্রতিনিধি, সাইয়্যেদ উজায়ের নিজামী, ওই পর্যবেক্ষক নৌকায় ছিলেন এবং তিনিই সিনেটর মোশতাক আহমদের জাহাজ আটক হওয়ার খবর শেয়ার করেছেন।’
জেআই প্রধান হাফিজ নাঈমুর রহমান বহরে থাকা কর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গাজার প্রতি সংহতি প্রকাশে দেশজুড়ে বিক্ষোভের ঘোষণা দেন। লাহোরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা আগামীকাল সুমুদ গাজা বহরের ওপর হামলার প্রতিবাদে দেশব্যাপী কর্মসূচি পালন করব।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আমাদের জাতীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাই যেন তারা এ ব্যাপারে কার্যকর ভূমিকা পালন করেন।’
সাবেক পিটিআই সিনেটর ফয়সাল জাভেদ খান এক্সে পোস্ট দিয়ে মোশতাক আহমদের নিরাপত্তার জন্য দোয়া করে লিখেছেন, ‘আসুন, আমরা সবাই ইসরায়েলের এই আগ্রাসনের নিন্দা জানাই, যা চালানো হয়েছে এসব শান্তিপ্রিয় মানবতাবাদীদের বিরুদ্ধে, যারা কেবল সাহায্য পৌঁছে দিতে ও ন্যায়বিচারের দাবিকে উঁচু করতে চেয়েছিলেন।’
আইনজীবী ও কর্মী জিবরান নাসির এক্সে লিখেছেন, বহরে থাকা কর্মীদের সাহস প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, ‘তাদের হৃদয়ে শুধু সাহস, আর জাহাজে আছে কেবল ত্রাণসামগ্রী।
কিন্তু আইডিএফ (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) আজ বিশ্ব সম্প্রদায়ের ব্যর্থতা ও ভীরুতায় আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।’
তিনি আরো যোগ করেন, ‘আমাদের একমাত্র ভরসা আজ পৃথিবীর সাধারণ মানুষ।’
ইসরায়েলি বাহিনী বুধবার ৪০টিরও বেশি বেসামরিক নৌযানের বহর আটক করে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও রয়েছেন।
ফ্লোটিলার প্রথম বহরটি গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করে।
পরে ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তিউনিসিয়া ও ইতালির সিসিলি দ্বীপ থেকে আরো নৌযান যুক্ত হয়।
এ ছাড়া গ্রিসের সাইরাস দ্বীপ থেকেও কয়েকটি নৌযান ত্রাণ নিয়ে ফ্লোটিলায় যোগ দেয়।
‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ গাজার মানুষের জন্য সমুদ্রপথে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ। বহরে প্রায় ৪৪ দেশের ৫০০ মানুষ রয়েছে—যাদের মধ্যে আছেন যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়ামের নাগরিকসহ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধি, আইনজীবী, চিকিৎসক, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীরা।
সূত্র : ডন
ইএ/টিকে