ফিলিস্তিনমুখী ফ্লোটিলার অভিযাত্রী বাংলাদেশের খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী ড. শহিদুল আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন বার্তা দিয়েছেন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকালে তিনি তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে সর্বশেষ পোস্টে বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
ড. শহিদুল আলম লিখেছেন,‘আমরা এখন ফিলিস্তিনের টাইম জোনে। আজ সকালে সমুদ্র শান্ত, তবে কতক্ষণ তা এমন থাকবে তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। গতকাল সমুদ্র ভয়াবহ উত্তাল ছিল, আমি কিছুটা অসুস্থও হয়ে পড়েছিলাম, তবে এখন ভালো আছি।’
তিনি জানান, তারা সুমুদ ফ্লোটিলার মূল বহর থেকে আলাদা-এটি ছিল তাদের পূর্বনির্ধারিত কৌশল। এখন যেহেতু সুমুদের নৌযানগুলো ইসরায়েলি বাহিনী আটকে দিয়েছে, তাই তাদের নৌবহরের ৯টি জাহাজ এখনও এগিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ৮টি ছোট নৌযান কিছুটা এগিয়ে থাকলেও আজ তারা সেগুলোকে অতিক্রম করে ফ্রন্ট ভেসেল (বহরের সম্মুখ যান) হওয়ার পরিকল্পনা করছেন। এতে ঝুঁকি আছে, তবে সেই ঝুঁকি নেয়ার জন্যই আমরা প্রস্তুত,’ লিখেছেন তিনি।
তাদের অবস্থানরত সবচেয়ে বড় জাহাজ কনসায়েন্সে আছেন ৯৬ অভিযাত্রী-এর মধ্যে ৮২ জনই গণমাধ্যম ও মেডিকেল পেশাজীবী, পাশাপাশি কিছু আয়োজক, ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য এবং জাহাজের নাবিকরাও রয়েছে।
শহিদুল আলম জোর দিয়ে বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ্য মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেয়া নয়। যদিও কিছু পণ্য আমাদের সঙ্গে আছে, যাতে আমরা গাজার ভাই-বোনদের ওপর বোঝা হয়ে না দাঁড়াই। আমরা এসেছি ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ ভাঙতে, সাংবাদিক ও চিকিৎসকদের হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। গাজায় বেসামরিক নারী-পুরুষ ও শিশুদের মতো তারাও নিহত হয়েছেন। বিদেশি গণমাধ্যমকে আটকে দেয়া হয়েছে, তাই এই ‘গণমাধ্যমের ওপর আরোপিত অবরোধটিও’ ভাঙতে চাই।’
ফরাসি এনজিও এমএসএফ-এর ১৪তম চিকিৎসক নিহত হওয়ার খবর রাতেই পেয়েছেন তারা। শহিদুল আলম লিখেছেন, ‘এখন দেখার বিষয় ফ্রান্স কী পদক্ষেপ নেয়। এখন পর্যন্ত তাদের কেবল মিষ্টি কথাই শুনেছি, আদতে কাজ হয়নি।’
পোস্টের শেষ অংশে তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে লিখেন:‘আপনাদেরর ভালোবাসা ও উৎসাহ আমাদের শক্তির উৎস। আমরা সফল হবোই। ফিলিস্তিন অবশ্যই (জায়নবাদীদের কব্জা থেকে) মুক্ত হবে।’
বৃহস্পতিবার থেকেই ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করে আসছে সুমুদ ফ্লোটিলার একটি যান ম্যারিনেট ছাড়া অন্য ৪৩টি ছোট-বড় নৌযানই আটকে দিতে সফল হয়েছে তারা। সেই সঙ্গে আটক করে ফেলা হয়েছে অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ ৫ শতাধিক অভিযাত্রীকে। তবে ইসরায়েলি বাহিনীর এমন ন্যক্কারজনক অভিযানের কথা মাথায় রেখে মূল বহর থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন থেকে এখনও এগিয়ে যাচ্ছে এই বহরের আরও কয়েকটি জাহাজ। ড. শহিদুল আলম যে জাহাজের অভিযাত্রী হয়েছেন সেই কনসায়েন্স জাহাজটি সহ ছোট ছোট আর কমপক্ষে ৮টি যান এখনও গাজার পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ইতালির ওট্রান্টো থেকে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ফ্লোটিলার অভিযাত্রী হন ড. শহিদুল আলম। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার উদ্দেশে এগিয়ে চলা ত্রাণবাহী নৌ-বহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় যোগ দেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম। সামাজিক মাধ্যমে দেয়া পোস্টে নিজেইে এসব জানিয়েছেন তিনি। ইতালির ওট্রান্টো থেকে সুমুদ ফ্লোটিলার বৃহত্তম জাহাজ ‘কনসায়েন্স’-এর অভিযাত্রী হন ড. শহিদুল আলম।
কেএন/টিকে