ভারত সীমান্তে কোনোরকম ‘দুঃসাহস’ দেখালে তার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের ‘ইতিহাস ও ভূগোল’ উভয়ই বদলে যেতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সম্প্রতি গুজরাটের কচ্ছে সামরিক ঘাঁটিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি তোলেন, পাকিস্তান স্যার ক্রিক সংলগ্ন অঞ্চলে সামরিক অবকাঠামো তৈরির চেষ্টা করছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে সমস্ত সীমান্ত নিয়ে বিরোধ রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম স্যার ক্রিক; যা পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশকে ভারতের গুজরাট রাজ্য থেকে পৃথক করেছে। রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্যের পরই আবার খবরের শিরোনামে চলে এসেছে এই অঞ্চল, যাকে কেন্দ্র করে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের।
অন্যদিকে, রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্যের রেশ ধরে পাকিস্তানকে আরও একবার সতর্ক করেছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর চিফ অব আর্মি স্টাফ জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। পাকিস্তানকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের যেকোনও ধরনের পদক্ষেপের জবাবে ভারতীয় সেনাবাহিনী আর সংযম দেখাবে না। মানচিত্রে নিজেদের ভৌগোলিক অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে পাকিস্তানকে তাদের রাষ্ট্রের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করতে হবে।
• কী বলেছেন রাজনাথ সিং?
দশেরা উপলক্ষে গুজরাটের ভুজে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ঘাঁটিতে গিয়েছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। সেখানে সেনাবাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে উদযাপনের পাশাপাশি শস্ত্র পূজায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। পরে ভাষণের সময় বিতর্কিত স্যার ক্রিক অঞ্চলের প্রসঙ্গ টেনে পাকিস্তানের উদ্দেশে বার্তা দেন। তিনি বলেন, স্যার ক্রিক অঞ্চলে পাকিস্তানের কোনোরকম দুঃসাহসিক কার্যকলাপ দেখালে, তার কড়া জবাব দেবে ভারত। যার ফলে (পাকিস্তানের) ইতিহাস-ভূগোল পর্যন্ত বদলে যেতে পারে।
তিনি বলেন, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে, ভারতীয় সেনাবাহিনী লাহোরে পৌঁছে গিয়েছিল। আর আজ ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে, পাকিস্তানের মনে রাখা দরকার, করাচিতে যাওয়ার একটা পথ এই স্যার ক্রিকের মধ্যে দিয়েই যায়।
রাজনাথের দাবি, স্যার ক্রিক নিয়ে বিরোধ মেটানোর জন্য ভারতের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক স্তরে সমাধানের চেষ্টা হলেও পাকিস্তানে তাতে সম্মত হয়নি। তিনি বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পরও স্যার ক্রিক নিয়ে বিরোধ অব্যাহত রয়েছে। ভারত কূটনৈতিক দিক থেকে সমস্ত স্তরে এর সমাধানের চেষ্টা করলেও পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে সমস্যা রয়েছে।
‘‘তাদের উদ্দেশ্য শুদ্ধ নয়। পাকিস্তানি সেনা যেভাবে স্যার ক্রিকে সামরিক অবকাঠামোর বিস্তার ঘটাচ্ছে তা তাদের সেই উদ্দেশ্যেরই প্রতিফলন।’’
এরপরই তিনি ইসলামাবাদকে সতর্ক করে বলেন, ভারতের বিরুদ্ধে এমন যে কোনো ধরনের আগ্রাসনের কড়া জবাব দেবে ভারত। পরদিন একই সুর শোনা গেছে জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীর কণ্ঠেও।