এখানে অনেক নো বল হয়ে গেছে: বুলবুল

চার মাস আগে স্বল্প সময়ের জন্য বিসিবি প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসেছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। চার মাস যেতেই এবার লম্বা সময়ের জন্য বিসিবি প্রধানের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন তিনি। আজ রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে হবে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচন। সেখানে নির্বাচিত পরিচালকদের ভোটে প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন বুলবুল সেটা অনুমেয়ই। কিন্তু স্বল্প সময়ের প্রেসিডেন্ট থেকে যেভাবে লম্বা সময়ের দায়িত্বে যাচ্ছেন তিনি, সেখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রভাবও দেখছেন ক্রীড়াঙ্গনের অনেকেই। অনেক প্রার্থী সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগে নির্বাচন থেকেও সরে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বুলবুল। উল্টো স

ম্প্রতি তার বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগের ব্যাপারেও খোলামেলা উত্তর দিয়েছেন সাবেক এ ক্রিকেটার। মাঠের ক্রিকেটের চেয়ে বোর্ড চালানো যে কঠিন, সেটাও অনুধাবন করেছেন তিনি। আর সেজন্যই বললেন, এখানে অনেক নো বল হয়ে গেছে।
বিসিবি প্রেসিডেন্ট হিসেবে গতকাল শেষদিন ছিল বুলবুলের। অফিসের ফাঁকে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিমও। তিনিও ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে মনোনীত হয়ে বিসিবিতে এসেছিলেন। দুজনই আবার নির্বাচন করছেন ঢাকার জেলা ও বিভাগ থেকে। সেখানে থাকা তিনজন প্রার্থী থেকে পরিচালক হবেন দুজন। এরই মধ্যে একজন নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ায় পরিচালক নিশ্চিত আমিনুল ইসলাম ও নাজমুল আবেদীন। ভোট নিয়েও চিন্তা ছিল না তাদের। কেননা, পছন্দ অনুযায়ী তৃতীয় ধাপে কাউন্সিলর পেয়েছিলেন তারা। তার পরও সরকারের কোনো প্রভাব নেই উল্লেখ করে বুলবুল বলেন, ‘এখানে আমার কাছে (সরকারের) প্রভাব কিছু মনে হয়নি।’ চার মাসের জন্য এসে কেন এখন চার বছর থাকতে চান বুলবুল। ১০ হাজার ডলারের চাকরি রেখে বিনা বেতনে বিসিবির পরিচালক হতে যাওয়ার কারণ কী! বুলবুল অবশ্য ব্যাখ্যাটা দিলেন এভাবে, ‘আমার মনে হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য আমার (বিসিবিতে) চালিয়ে যাওয়া দরকার। আমাকে যারা ভোট দিচ্ছেন বা ভোট দেবেন না অথবা আপনারা (সাংবাদিক) যারা আছেন, যদি মনে করেন আমি যথেষ্ট ভালো নই, আমি চলে যেতে আগ্রহী আছি যে কোনো সময়। একই সঙ্গে এটাও বলতে চাই, আমার একটাই লক্ষ্য—বাংলাদেশ ক্রিকেট।’

বিসিবি নির্বাচন ঘিরে এবার প্রচুর নাটকীয়তা দেখা গেছে। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে বিভিন্ন প্রার্থীর সঙ্গে বসেছিলেন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এমনকি প্রার্থীদের মধ্যে একটা সমঝোতার চেষ্টাও করে গেছেন তিনি। অর্থাৎ নির্বাচন ঘিরে সরকারের একটা প্রভাব ছিল আড়াল থেকেই। তবে বুলবুল সেখানে নিজের লাভ দেখেন না, ‘গত মেয়াদে (সর্বশেষ চার মাস) ক্রীড়া উপদেষ্টা আমাকে সহযোগিতা করেছেন। তাকে ধন্যবাদ দিতে চাই—তিনি মন্ত্রী পদমর্যাদার মানুষ। আপনি বলছিলেন বয়কটকারীদের কথা। আমি নিজে জানি, তিনি (ক্রীড়া উপদেষ্টা) রাত-দিন কাজ করেছেন—শুধু সুষ্ঠু নির্বাচন নয়, একটি ভালো বোর্ড গঠনের জন্যও।’ বুলবুলের কথায়ও পরিষ্কার, ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে প্রার্থীদের বিভিন্ন সময়ে সমঝোতার বৈঠকের কথা। তবে বর্তমান পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, এভাবে নির্বাচন হলে ৪৩টির মতো ক্লাব ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে এমন কঠিন চ্যালেঞ্জ কীভাবে মোকাবিলা করবেন বুলবুল! উত্তরে তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে ক্লাবের বিকল্প নেই। ক্রিকেটে তাদের অবিশ্বাস্য অবদান আছে। তাদের ভূমিকা, প্রয়োজনীয়তা, অবদান—সবকিছুই আমরা তুলে ধরব। চেষ্টা করব তাদের ম্যানেজ করতে। ঘুরেফিরে আমরা তো একই সমাজের মানুষ, হয়তো পারব।’ একই সঙ্গে নির্বাচনের আগে তার করা চার মাসের অর্জনগুলোও তুলে ধরেন তিনি। জাতীয় দলের সাফল্যকেও বোর্ডের অর্জন বলে মনে করেন বুলবুল।

খেলোয়াড় হিসেবে অনেক বোলারের বাউন্সার সামলেছিলেন বুলবুল। দেশের প্রথম টেস্টেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। এবার নির্বাচনে কেমন মোকাবিলা করলেন, তাও জানালেন তিনি ‘ওখানে (মাঠে) তো একটা টেকনিক থাকে। আপনি একটার বেশি বাউন্সার দিতে পারবেন না, নো বল করতে পারবেন না। এখানে অনেক নো বল হয়ে গেছে। এখানে অনেক বিমার এসেছে, নো বল দেওয়া হয়নি।’

এবি/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে স্বর্ণের দাম, আউন্সপ্রতি ছাড়াল ৩৯০০ মার্কিন ডলার Oct 06, 2025
img
বড় শহরে প্লট দেয়া বন্ধ করা উচিত: পরিবেশ উপদেষ্টা Oct 06, 2025
img
ব্যবসায়ীদের জনগণের কল্যাণে গবেষণায় খরচ করতে হবে: অর্থ উপদেষ্টা Oct 06, 2025
img
জামায়াতের সম্ভাব্য জোট নিয়ে উদ্বেগ নেই : তারেক রহমান Oct 06, 2025
img
শেখ রেহানা পরিবারের নামে প্লট বরাদ্দের ৩টি রশিদ রশিদ আদালতে জমা Oct 06, 2025
img
শেখ হাসিনাকে ফেরতের অনুরোধ পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে ভারত: বিক্রম মিশ্রি Oct 06, 2025
img
আওয়ামী লীগ নেতা বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা Oct 06, 2025
img
গাজা উপত্যকায় এখনও বোমাবর্ষণ করছে ইসরায়েলি বাহিনী, নিহত ৬৩ Oct 06, 2025
img
বিএনপি-জামায়াত তাদের পুরনো জোটের ভাবনা ফিরিয়ে আনুক: মঞ্জু Oct 06, 2025
img
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের মাঝেই থাকব: বিবিসি বাংলাকে তারেক রহমান Oct 06, 2025
img
শাট ডাউনের মেয়াদ বাড়তে থাকলে সরকারি কর্মীদের ব্যাপক ছাঁটাই হতে পারে: হোয়াইট হাউস Oct 06, 2025
img
হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে ঢাকায় পৌঁছেছেন হামজা চৌধুরী Oct 06, 2025
img
এনসিপি বলে এদেশে কিছু থাকবে না: সাংবাদিক ইলিয়াস Oct 06, 2025
img
শেখ সাদির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন পরীমনি Oct 06, 2025
img
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল ১.৫ শতাংশ Oct 06, 2025
img
এশিয়ার পারমাণবিক শক্তি উন্নয়নের অগ্রদূত বাংলাদেশ: রোসাটম Oct 06, 2025
img
জ্বালানি তেলের নতুন বাজার খুঁজে পেল রাশিয়া Oct 06, 2025
img
নাহিদের আখের গোছানোর অভিযোগে কারা রয়েছেন, প্রশ্ন জাহেদ উর রহমানের Oct 06, 2025
img
সেফ এক্সিট খুঁজতে উপদেষ্টাদের কষ্ট করতে হবে না : রুমিন ফারহানা Oct 06, 2025
img
‘বাপ-বেটা দুজনেই পাগল’, আরিয়ান খান প্রসঙ্গে করণ জোহর Oct 06, 2025