রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও উপস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা একদিকে অভ্যন্তরীণ অচল অবস্থা অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান শঙ্কার প্রতিফলন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একের পর এক বৈঠকে বসে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের পথ খুঁজছে। কিন্তু দলগুলো তাদের অনড় অবস্থান ছাড়তে নারাজ। ফলে পুরো প্রক্রিয়া যেন লেবু চিপার মত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিওতে তিনি এসব কথা বলেন।
জিল্লুর রহমান বলেন, কমিশনের মেয়াদ ফুরানোর আগেই সমাধানে পৌঁছানো না গেলে সংকট আরো ক্ষণীভূত হবে। মূল সমস্যাটা হলো দলগুলো নিজেদের জাতীয় স্বার্থ থেকে বের হতে পারছে না। সবাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে আলাদা আলাদা প্রস্তাব দিয়েছে।
কমিশন ছয়টি পথ খোলা রেখেছে। গণভোট, সাংবিধানিক আদেশ, গণপরিষদ, সংসদকে সংস্কার সভা বানানো, ১৩ তম সংসদ কিংবা সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়ে। কিন্তু একটি পথ বেছে নেওয়ার মত রাজনৈতিক ঐকমত্য এখন পর্যন্ত তৈরি হয়নি। এখানেই ধরা পড়েছে বাংলাদেশী রাজনীতির দীর্ঘস্থায়ী ব্যাধি।
জিল্লুর বলেন, দলগুলো নিজেদের অংক নিয়ে ব্যস্ত। রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ প্রশ্নে সামষ্টিক দায়বদ্ধতা অগ্রাধিকার পাচ্ছে না। আজকের বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ অনেকগুলো ছোট ছোট গোষ্ঠীর হাতে ছড়িয়ে পড়ছে। কারো বাড়ি ঘরে হামলা, কারো পোশাক বা গান শোনার অধিকার কেড়ে নেওয়া।
কোন বই পড়া যাবে তা নির্ধারণ করে দেওয়া।
এসবই নতুন ফ্যাসিবাদের রূপ। এর পেছনে কখনো থাকে রাজনৈতিক সুরক্ষা, কখনো সরকারি প্রশ্রয় আবার কখনো কৌশলগত নিরবতা।
জিল্লুর আরো বলেন, ছোট ছোট নিয়ন্ত্রণ বা মাইক্রোফ্যাসিবাদ সমাজ জুড়ে ছড়িয়ে পড়লে পরে তা বৃহৎ হয়ে ওঠে। তখন আর কোনো কমিশন, সনদ কিংবা অন্তর্বর্তী সরকার দিয়েও নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এদিকে আন্তর্জাতিক মহলও বাংলাদেশের প্রতি দৃষ্টি রাখছে। ব্রিটিশ এমপিদের চিঠি যেখানে, বিচার ব্যবস্থার ব্যর্থতা, রাজনৈতিক আটক এবং সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার প্রসঙ্গ এসেছে। এটা শুধু সতর্কবার্তা নয় আন্তর্জাতিক চাপের ইঙ্গিত।
এমআর/টিকে